১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১৭:৪০

রাবিতে শহীদ শামসুজ্জোহা দিবস পালিত

রাবি প্রতিনিধি

রাবিতে শহীদ শামসুজ্জোহা দিবস পালিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ ড. শামসুজ্জোহা দিবস পালিত হয়েছে। সোমবার নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের নেতৃত্বে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ শহীদ ড. শামসুজ্জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। 

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হল, পেশাজীবী সমিতি, রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পুস্পস্তবক অর্পণ করে। সকাল সাড়ে আটটায় জোহা স্মরণে অফিসার সমিতি কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দিনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাবির শহীদ প্রক্টর অধ্যাপক ড. জোহা স্মারক বক্তৃতা দেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক শ্যামল চক্রবর্তী। 

এসময় অধ্যাপক শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, ‌‌'যে সকল গুণাবলীর জন্য একজন পাঠদাতা প্রকৃত শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করেন, ড. শামসুজ্জোহা নিঃসন্দেহে সেই স্থান অর্জন করেছেন। সর্বোপরি রাধাকৃষ্ণন বলেছিলেন ‘শিক্ষক সমাজ জাতির মেরুদণ্ড’ এর সত্য মিথ্যা পরীক্ষা করবে সুশীল সমাজ। তবে ‘ভঙ্গুর’ মেরুদণ্ড নিয়ে দিন অতিবাহিত করলে জাতির ‘ঋজু’ মেরুদণ্ড নির্মাণ হয় না, নিজের জীবন দান করে আমাদের জানিয়ে গিয়েছিলেন শহীদ ড. শামসুজ্জোহা। তার প্রত্যয়ী আত্মত্যানে তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের বন্দিশালা থেকে মুক্ত বাংলাদেশ।” 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আইয়ুব সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে, জোহা সেদিন জানতেন পাকিস্তানি বাহিনী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করবে, তিনি সেনা সদস্যদের সামনে গিয়ে বলেছিলেন, কোনো ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার আগে যেন আমার গায়ে লাগে। তিনি ছাত্রের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। এমন মহান শিক্ষক কয়জন হতে পারে, সবাই কি জোহা হতে পারবে।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘ড. জোহার আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলন আরও ত্বরান্বিত হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম শেখ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, রাবি প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্মচারী, বিভিন্ন অনুষদ বিভাগের শিক্ষকরা।

উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। এদিনটিকে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষক হিসেবে পালন করে থাকে।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর