২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ২০:৪৪

চবি ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণের অভিযোগ, দফায় দফায় সংঘর্ষ

চবি প্রতিনিধি

চবি ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণের অভিযোগ, দফায় দফায় সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রসূল নিশানকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এর জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে তালা, অগ্নিসংযোগ ও দফায় দফায় সংঘর্ষে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। 

শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে এ ঘটনা শুরু হয়ে শনিবার দিনভর ক্যাম্পাসে দু' পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়।

জানা যায়, নগরীর লালখান বাজার থেকে শনিবার দিবাগত রাতে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গোলাম রসূল নিশানকে ‘অপহরণ’র খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শাখা ছাত্রলীগের দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেইট এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে রাখে তারা। এ ঘটনায় তারা ছাত্রলীগের ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগে এনে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে।

অপহরণের ঘটনা নিয়ে এক পর্যায়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ছাত্রলীগের দু’টি গ্রুপ উল্কা ও সিক্সটি নাইন। রাতভর দফায় দফায় এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়। এরপর বেলা ১১ টার দিকে দু’পক্ষ ফের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে। 

পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ দুপুরের খাবার খেতে গেলে বিকেল চারটার দিকে ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে আহত হয় আরো চার জন।

আহতরা হলেন-শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের অর্ণব ইসলাম, ২০১৫-১৬ সেশনের ধ্রুব, ২০১৮-১৯ সেশনের অভয়, আরবী বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের মোহাম্মদ ইমাম, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের মাহমুদ, একই বিভাগের মামুন, পদার্থবিদ্যা বিভাগের ১৩-১৪ সেশনের মো. আনিস, আধুনিক ভাষা ইনিস্টিটিউটের ২০১৩-১৪ সেশনের আবু সাঈদ মারজান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের মিলন, বন ও পরিবেশবিদ্যা ইন্সটিটিউটের ২০১৪-১৫ সেশনের সাঈদ করিম মুগ্ধ,  ইংরেজি বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের মোহাম্মদ রফিক। ২০১৫-১৬ সেশনের রিপন তঞ্চঙ্গা, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের রিদয়, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ইব্রাহীম খলিল সাকিল। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অর্ণব ও ধ্রুবসহ অজ্ঞাত একজন কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।

সাবেক উপ দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুল বলেন, সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে যাওয়ার পথে লালখান বাজার এলাকায় সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানকে অপহরণ করে মারধর করে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে টাইগারপাস এলাকা থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। আমরা এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করছি।

এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবু তোরাব পরশ বলেন, অপহরণের ঘটনাটি একটি সাজানো নাটক। এ ঘটনার সাথে আমাদের কোনো নেতা-কর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে জামাত-শিবিরের স্টাইলে এক নেতাকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর রাতের আঁধারে হামলা করা হয়েছে।

হাটহাজারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ছাত্রলীগের দুই দ্রুপের মধ্যে রাতে সংঘর্ষ হয়।এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর