দেশে চলমান কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি সহ সব ধরনের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। আজ রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সামনে উপস্থিত হয়ে সাদা দলের নেতারা এ সংহতি প্রকাশ করেন।
বিএনপিপন্থী শিক্ষকেরা বলেন, একটি যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের গুলি করে যেভাবে পাখির মতো হত্যা করা হয়েছে এটি কখনো ইতিহাসের পাতায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত যে, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি। কোটা আন্দোলনে আটককৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সব শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানান।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক জমির হোসেন বলেন, আমরা এখানে ছাত্রদের জন্য এসে দাঁড়িয়েছি। এই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অনেক ছাত্র নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকে আছে শিশু, অপ্রাপ্ত বয়স্ক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে, হামলায় দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি।
তিনি আরও বলেন, এসব সংবাদে আমরা মর্মাহত, ভারাক্রান্ত। আমাদের আত্মীয়ের মধ্যেও এমন ঘটেছে। আমরা শিক্ষক হিসেবে এসব মেনে নিতে পারছি না। আমরা বিবেকের তাড়নায় এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। যারা নিহত হয়েছে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করা হোক। যারা বন্দি অবস্থায় আছে তাদের মুক্তির দাবি জানাই।
ব্যবসায় শিক্ষার ডিন অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ ভূইয়া বলেন, '৫২ এর ভাষা আন্দোলন, '৬৯ এর গণআন্দোলন, '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ আন্দোলন কেউ আবারো ছাত্র আন্দোলন ছাড়িয়ে গেছে। এবার যেটা হয়েছে সেটি গণহত্যা। এ দায় সরকারকে নিতে হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। এক দফা, এক দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুই করতে পারিনি, অন্তত সংহতি প্রকাশ করতে পারলে যারা জীবন দিয়েছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দীন বলেন, চোখের সামনে আমার শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, আমি শিক্ষক হিসেবে তার প্রতিবাদ জানাতে পারিনি। দেরিতে হলেও আজ আমরা এখানে সংহতি জানাতে এসেছি। আমি একাত্তর দেখিনি, বায়ান্ন দেখিনি, বাষট্টি দেখিনি, নব্বই দেখিনি, আমি আমার নিজের চোখে এই চব্বিশ দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, এখন দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে বলা হচ্ছে দরজা খোলা, এই আগে কেন বন্ধ ছিল। এই পুলিশকে গুলি করার অনুমতি কে দিয়েছে, জাতি আজকে জানতে চায়। একজন মন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বিষয়েও ছাত্রলীগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজকের এ অবস্থা সৃষ্টির জন্য কারা দায়ী, তা দেশের ১৮ কোটি জনগণ অবগত।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ