ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের ক্যাম্পাসে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে অভিযোগে ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্ত তাদের।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট শুরু করেন।
বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীদের ‘Current Students of BUET’ নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে শিক্ষার্থীরা জানান, একাডেমিক ক্যালেন্ডারের চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রাজনৈতিকভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ন্যূনতম শাস্তি হিসেবে হলের সিট বাতিল না করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের হল থেকে বের করে দেয়, বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী ও রশিদ হলে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। এই ধরনের কর্মকাণ্ড আরও বৃহত্তর আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা পুরো ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
এতে বলা হয়, ‘অহর্নিশ ১৯’-এর আহ্বানে সকল ব্যাচ একত্রিত হয়ে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বয়কটের কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত দ্রুত সমাপ্ত করার দাবিতে মঙ্গলবার থেকে সকল ক্লাস বয়কট করা হলো।
শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার রাতে অভিযুক্ত দুই জন শিক্ষার্থী হলে উঠলে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। তীব্র ক্ষোভ থেকে মধ্য রাতেই ক্লাস-পরীক্ষা বয়কটের ঘোষণা দেন তারা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগকে বুয়েটে পুনর্বাসনের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল অভিযুক্তরা। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে শিক্ষাজীবন ব্যাহত করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও গত মার্চে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন গভীর রাতে বুয়েটে অনুপ্রবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করেছিলেন। ওই সময় প্রায় দেড় মাস বুয়েটে অচলাবস্থা ছিল। খুনিদের পুনর্বাসন ও ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা সৃষ্টিতে যারা কাজ করেছিল, তাদের শাস্তির আওতায় না এনে ক্যাম্পাসে পুনর্বাসনের প্রতিবাদেই এই ক্লাস-পরীক্ষা বয়কটের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত