রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

স্থাপনায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সমুজ্জ্বল

স্থাপনায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সমুজ্জ্বল

কবি সুকান্তের অগ্নিঝরা কবিতার চরণ খচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তেজস্বী প্রকাশ এবং নান্দনিকতার অনবদ্য স্মারক 'সাবাস বাংলাদেশ' ভাস্কর্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়ে সবুজের বুক-চিরে নির্মিত এই ভাস্কর্যটি।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক-ছাত্রদের স্মৃতিকে চির অম্লান রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করে কর্তৃপক্ষ। সিনেট ভবনের দক্ষিণে ১৯৯১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাবির কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের উদ্যোগে শিল্পী নিতুন কুণ্ডুর নকশায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এর ফলক উন্মোচন করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে এর পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে আরও বিভিন্ন স্থাপনা। এর মধ্যে শহীদ মিনার, বধ্যভূমি এবং শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা অন্যতম। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা হয় 'গোল্ডেন জুবেলী টাওয়ার'। আর শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে নির্মাণ করা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন। মুক্তিযুদ্ধ-কালীন রাজশাহীর বিভিন্ন স্থান থেকে নিরপরাধ মানুষকে ধরে এনে কাউকে শ্বাসরুদ্ধ করে, গুলি করে বা জবাই করে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি সৈন্যরা। তাদেরই স্মৃতিকে ধরে রাখতে তৈরি হয়েছে বধ্যভূমি। ২০০২ সালের ২১ ডিসেম্বর স্তম্ভটি তৈরি করা হয়। আর দেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. শামসুজ্জোহাসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পোশাক, মাথার খুলি এবং মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন উপকরণ সংরক্ষণ করা রয়েছে রাবির এই শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালায়।

এখানে ১৯৫২, '৬৬, '৬৯, '৭১ সালের আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত সংগৃহীত নিদর্শনগুলো পর্যায়ক্রমে প্রদর্শিত আছে। এটি দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক স্বয়ংসম্পূর্ণ জাদুঘর।

আর এর পাশেই রয়েছে রয়েছে রাবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। শহীদ মিনারের পটভূমিতে আছে বিখ্যাত শিল্পী মুর্তজা বশীর এবং ফনীন্দ নাথ রায়ের দুটি ম্যুরাল।

আর রাবির দীর্ঘ সময়ের পথচলাকে ধরে রাখতে নির্মিত গোল্ডেন জুবেলী টাওয়ারটি প্রধান ফটক পেরিয়ে সড়ক দ্বীপের ডানে, প্রশাসনিক ভবনের সামনের গোল চত্বরের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এর স্থপতি মৃণাল হক। টাওয়ারের সঙ্গে লাগানো ইস্পাতের একটি দেয়াল আছে। দেয়ালটির নাম ইস্পাতের কান্না। সেই দেয়ালে মালবাহী ভ্যান, ঘোড়ার গাড়ি, মানুষ, সাইকেল, সূর্যমুখী ফুল এবং শহীদ মিনারের কারুকাজ করা আছে। কারুকাজগুলো শিকল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। টাওয়ারটি স্থাপনের পর এটি দেখতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসত। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টাওয়ারটি এখন চাকচিক্য হারিয়ে ফেলেছে।

এ ছাড়া রাবিতে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রন্থাগার। যেখানে রয়েছে দুর্লভ ও দুষ্প্রাপ্য বইয়ের বিশাল সংগ্রহ। লাইব্রেরিটি বই পড়ুয়াদের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত। রাবির লাইব্রেরিতে পাঠকদের উপস্থিতি সারা বছরই থাকে।

 

সর্বশেষ খবর