রবিবার, ৫ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

যেভাবে যাত্রা শুরু

যেভাবে যাত্রা শুরু

লালমাই পাহাড়ের গায়ে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষায় নতুন আলোক শিখা হিসেবে শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে। কুমিল্লা মহানগরী থেকে আট কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সালমানপুরে ৫০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ১৭টি বিভাগে পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, তিনটি একাডেমিক ভবন, তিনটি ছাত্র হল, একটি ছাত্রী হল, কেন্দ্রীয় মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া ও নির্মাণাধীন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। পথচলার আট বছর পেরিয়ে নবম বছরে পদার্পণ করেছে দেশের ২৫তম পাবলিক এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০০৭ সালের ২৮ মে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। পাকিস্তান শাসনামলের প্রথম থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শুরু হয় রাজপথের আন্দোলন। কুমিল্লাবাসীর প্রাণের দাবি প্রাচীন সমতট ভূমির গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল কুমিল্লায় ১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। ১৯৬২ সালে সময় আসে স্বপ্ন বাস্তবায়নের। সিদ্ধান্ত হয় কুমিল্লায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। তবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফজলুল কাদের চৌধুরী কুমিল্লার স্থলে চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থানান্তর করেন। তারপর আবারও আন্দোলন, আবারও অপেক্ষা। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে কাঙ্ক্ষিত সেই বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য। ২০০৬ সালের ২৮ মে জাতীয় সংসদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। ২০০৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৩০০ জন শিক্ষার্র্থী, ৩০ জন শিক্ষক কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে ২০০৭ সালের ২৮ মে যাত্রা শুরু করে হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির। রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজনৈতিক নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে আট বছর অতিক্রম করেছে। গত নভেম্বরে ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক কুমিল্লার সন্তান ড. আলী আশরাফ। তিনি যোগদানের পর বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেন। ক্লাসরুম সংকট, লাইব্রেরি সমস্যা দূরীকরণ প্রভৃতি। ব্যবস্থাপনা শিক্ষা প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, শুরু থেকেই ভয়াবহ সেশনজটের কবলে পড়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে প্রথম তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা প্রায় এক বছরের জটে পড়ে। প্রথম ব্যাচ সাত বছরে মাস্টার্স শেষ করেছে, যা শেষ করার কথা ছিল পাঁচ বছরে। তৃতীয় ব্যাচ এখনো মাস্টার্স শেষ করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আবাসন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তিনটি ছাত্র হলে প্রায় ৬০০টি সিট এবং একমাত্র ছাত্রী হলে রয়েছে মাত্র ২০০ সিট। যা ৫০০০ শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট নয়। বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীদের শহরে থাকতে হচ্ছে, গুনতে হচ্ছে অধিক ভাড়া। এ ছাড় পরিবহন সমস্যায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা। রয়েছে ক্লাস রুমের তীব্র সংকট। নতুন ভিসি প্রফেসর ড. আলী আশরাফ যোগদানের পর অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। আশা করছি তার নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত এগিয়ে যাবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আলী আশরাফ জানান, তিনি এ অঞ্চলের সন্তান। তিনি দায়িত্ব নিয়ে বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নিয়েছেন। শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

 

 

সর্বশেষ খবর