সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

গ্রুপ ডিসকাশন এবং পার্সোনাল ইন্টারভিউর প্রয়োজনীয়তা

গ্রুপ ডিসকাশন এবং পার্সোনাল ইন্টারভিউর প্রয়োজনীয়তা

গ্রুপ ডিসকাশন ও পার্সোনাল ইন্টারভিউকে সংক্ষেপে জিটিপিআই বলে। ক্যারিয়ার গঠনে গুনটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এর মাধ্যমে চারপাশের দুনিয়া সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। থাকা যায় বিশ্বের সঙ্গে আপডেট। এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন -শামছুল হক রাসেল

 

গ্রুপ ডিসকাশন আর পার্সোনাল ইন্টারভিউ। সংক্ষেপে জিডিপিআই। ম্যানেজমেন্টের প্রবেশিকা পরীক্ষার পর এর মাধ্যমেই বিভিন্ন ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান বেছে নেয় আগামী দিনের ম্যানেজারদের। ম্যানেজমেন্টের কাজকর্ম সামলানো মুখের কথা নয়। চার পাশের দুনিয়া সম্পর্কে একটা সামগ্রিক ধারণা তো থাকতেই হবে, কিন্তু তার পাশাপাশি চাই প্রচুর ধৈর্য, পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, একসঙ্গে সবাইকে নিয়ে চলার দক্ষতা ইত্যাদি। লিখিত পরীক্ষায় এ ধরনের সচেতনতা ও দক্ষতা যাচাই করা কঠিন। সেগুলো বিচার করে নেওয়ার জন্যই সেই জিডিপিআই।  

এটাও বেশ কঠিন পরীক্ষা ও তীব্র প্রতিযোগিতার ব্যাপার। অথচ এর কোনো বাঁধাধরা পাঠ্যসূচি নেই। এর জন্য প্রস্তুত হওয়ার পদ্ধতিটাও অন্য রকম। চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতির জন্য চারপাশের জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান ও চেতনা যথাসম্ভব প্রখর এবং প্রসারিত করে তুলতে হবে। কারও পক্ষেই সব বিষয়েই সমান জ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয়। সমসাময়িক ঘটনার সবকিছুই কি জানা যায়? নিশ্চয়ই নয়। তবে চেষ্টা করতে হবে প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখতে। কি নিয়ে তর্ক হচ্ছে, তর্কে দু'পক্ষের মূল বক্তব্য বা যুক্তিগুলো কি, সে সম্বন্ধে একটা ধারণা থাকা জরুরি। পাশাপাশি যদি আরেকটু বিশেষ তথ্য আয়ত্ত থাকে, তা হলে তো কথাই নেই। ধারণা বা জ্ঞান সবকিছুর জন্যই কিন্তু খবরের কাগজে প্রতিদিন চোখ রাখতে হবে। সব খবর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ার সময় না থাকলেও সম্পাদকীয় অংশটা অন্তত পড়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে নানা বিষয় সম্পর্কে একটা পরিষ্কার চিত্র পরিপূর্ণভাবে জানা যাবে। গ্রুপ ডিসকাশনে সাধারণত কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয় দিয়ে দেওয়া হয় আলোচনার জন্য। বিষয়টি যদি পরিচিত হয়, তা হলে তো খুবই ভালো। না হলেও আলোচনায় অবশ্যই অংশ নেয়া জরুরি।  

গ্রুপ ডিসকাশনে যারা বেশিরভাগ সময়ই চুপ করে থাকে, তারা কিন্তু অন্যদের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হয় তার কিছু সমস্যা আছে। হয় তার ভাষার ওপর সে রকম দখল নেই। নয়তো দ্রুত সে তার বক্তব্যকে গুছিয়ে বলতে পারে না। বিষয়টি অপরিচিত হলেও চিন্তার কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে প্রথমে অন্যদের বক্তব্য মন দিয়ে শুনতে হবে। কোনো জায়গায় কোনো অস্পষ্টতা আছে কিনা তা বুঝতে হবে। এবার বক্তাকে সেটি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে বলার অনুরোধের মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেওয়া যেতে পারে। আবার এমনও হতে পারে, অন্যরা যে যুক্তি দিচ্ছে, তার সঙ্গে আপনি একমত নন। এ ক্ষেত্রে যুক্তি পেশ করতে পার। তবে কোনো বিষয় জানা না থাকলে জানার ভান করা উচিত নয়। এতে নিজেরই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

সক্রিয়তা দেখানোও উচিত নয়। কারণ একজন ভালো ম্যানেজার শুধু ভালো বক্তাই নন, ভালো শ্রোতাও। অন্যদের বক্তব্য মন দিয়ে না শুনলে, তিনি কখনো ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। পার্সোনাল ইন্টারভিউয়ের ব্যাপারটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কঠিনও বটে। অনেকে মিলে একই সঙ্গে প্রশ্ন করা, না জানা বিষয় নিয়ে ক্রমাগত খুঁচিয়ে যাওয়া, না পারলে কঠোর, এমনকি অপমানজনক মন্তব্য- এমন নানা পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে। প্রথম কথা হলো, ঘাবড়ে গেলে চলবে না। এ পরিস্থিতিতে ইচ্ছা করেই ফেলা হয়। আপনার ধৈর্য ও নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা করে দেখার জন্য।

 

 

 

সর্বশেষ খবর