রবিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রয়োজন জব স্যাটিসফ্যাকশন

শামছুল হক রাসেল

প্রয়োজন জব স্যাটিসফ্যাকশন

জব স্যাটিসফ্যাকশন শব্দটা আমরা সাধারণত চাকরিক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার করে থাকি। সোজা ভাষায় বলতে গেলে আপনি যে কাজ করছেন সেই কাজটি করে যে সন্তুষ্টি পাচ্ছেন, তাকেই বলা হয় জব স্যাটিসফ্যাকশন। সংসারের কাজ করেও তৃপ্তি আর আনন্দ অবশ্যই পাওয়া যায়। কিন্তু চাকরি মানেই তো ছকে বাঁধা কাজ। এতে আর আনন্দ কোথায়? অফিস মানে তো শুধু কাজটুকু নয়, আরও কত ঝামেলা। সহকর্মীদের সঙ্গে মনোমালিন্য, বসের সঙ্গে ইগো প্রবলেম, অজানা কারণে ইনক্রিমেন্ট মিস হওয়া- এরকম হাজারও সমস্যা আমাদের কাজের জগৎকে আচ্ছন্ন করে রাখে। ফলে ভালো করে কাজ করার আনন্দটা আমরা উপভোগ করার সুযোগই পাই না। কিন্তু যে কাজটা আমাদের দিনের পর দিন করতে হয়, তা থেকে যদি কোনো তৃপ্তি না পাই তাহলে তো সেটা অসহ্য হয়ে উঠবেই। কাজের পরিবেশ হয়ে উঠে অসহ্য। আনন্দসহকারে কাজ করতে ও কাজের একঘেয়েমি কাটাতে রইল কিছু পরামর্শ-   

সমস্যা খুঁজে বের করুন : প্রথম প্রশ্নটা আপনার নিজেকেই করতে হবে। আপনি কাজ করে আনন্দ পাচ্ছেন না কেন? অফিসের আবহাওয়া ঠিক স্যুট করছে না। বস সব সময় রেগেই আছেন। কাজের চাপ বড্ড বেশি। সহকর্মীরা ফ্রেন্ডলি নন। কাজটাই আপনার ভালো লাগছে না। যদি এ ধরনের এক বা একাধিক সমস্যা ভালো কাজের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একে একে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন। কাজের চাপ ম্যানেজ করার জন্য একটু অর্গানাইজড হোন।  

হতে হবে কৌশলী : অফিসে বিভিন্ন চরিত্রের মানুষের সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে কাজ করতে হবে। সবারই নিজস্ব কিছু দুর্বলতা আছে। কেউ নিজের কাজ সম্বন্ধে খুব গর্বিত, কেউবা অন্যকে কৃতিত্ব দিতে চান না, কেউ হয়তো বেশ ফাঁকিবাজ। শুধু দোষ নয়, আপনার সহকর্মীদের নিশ্চয় অনেক গুণও রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো কাজের ব্যাপারে খুব অভিজ্ঞ, পরোপকারী বা স্বভাবে দিলদরিয়া এবং উদার মনের মানুষ। এসব বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে। চেষ্টা করুন সুসম্পর্ক বজায় রাখতে।   

সবার আগে লক্ষ্য : যে কাজটা দিনের পর দিন করে চলেছেন, তার লক্ষ্যটা আসলে কি? আপনার কাছে যদি কাজটা শুধুই একটা চাকরি হয়, তাহলে ভালো বেতনই আপনার একমাত্র লক্ষ্য। যদি কাজকে ক্যারিয়ার হিসেবে ধরে নেন, তাহলে কাজ ভালো করে শিখে, কাজের নতুন পদ্ধতি আয়ত্তে এনে নিজেকে প্রফেশনাল হিসেবে ডেভেলপ করাই আপনার লক্ষ্য। আর যে কাজটা করছেন, সেটা যদি আপনার ভালোবাসার জায়গা অর্থাৎ ফ্যাশন হয়, তাহলে শুধু কাজ করার আনন্দেই কাজ করে যাবেন। তবে আপনার মূল লক্ষ্য যাই হোক না কেন, সেটা অর্জনে যতটা সম্ভব সিনসিয়ারলি কাজ করে যেতে হবে। ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমে বড় লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন।   

অফিসের পরিবেশ : প্রত্যেক অফিসের একটা নিজস্ব ওয়ার্ক কালচার থাকে, যেটা আপনার মনমতো নাও হতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নিয়মের মতো এই নির্দিষ্ট ওয়ার্ক কালচার মেনে চলাটাও আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যদি আপনার মনে হয়, এই ওয়ার্ক কালচারে কোনো বড়সড় গলদ আছে, যা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছে, তাহলে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গসিপ না করে সরাসরি কর্তৃপক্ষকে জানানোই ভালো। সহকর্মী বিশ্বাস করে কথা বললে, তার মর্যাদা রাখবেন।  

প্রাধান্য দিন জীবনকে : শিক্ষা, দক্ষতা, প্রফেশনাল স্কিল ভালো করে যাচাই করে নেওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আপনার কাজ। নিজের কাজকে অবশ্যই ভালোবাসবেন কিন্তু কাজকে সম্পূর্ণভাবে ধ্যানজ্ঞান করে তুললে একটা একঘেয়েমি এসেই যায়। জীবনের আনন্দ উপভোগ করার জন্য ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্সটা ঠিক রাখা খুবই জরুরি। কাজের জন্যই জীবন নয়, কাজ জীবনেরই একটি অংশ মাত্র- এটা ভুলে গেলে কাজের বেড়াজালে পড়ে জব স্যাটিসফ্যাকশন পুরোপুরি হারিয়ে ফেলবেন।

 

 

সর্বশেষ খবর