রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সফলতা অর্জনে পরিকল্পনা

যে কোনো কাজ ভালোভাবে সম্পাদনের জন্য চাই পরিকল্পনা। অফিসের কর্মব্যস্ততার মাঝে প্রায়ই দিনের কর্মসূচিগুলো ঠিক রাখতে পারি না। সে জন্য প্রয়োজন একটি গোছানো পরিকল্পনা। এতে সহজ হবে দিনের যে কোনো কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা।

শামছুল হক রাসেল

সফলতা অর্জনে পরিকল্পনা

অফিসে পৌঁছানোর পর টানা ঘণ্টা তিনেক সোহেলের আর হুঁশ থাকে না। একে তো টেবিলে ফাইলের পাহাড়, মেইল বক্সে জমে ওঠা না পড়া মেইল, কেবিন থেকে মুহুর্মুহু বসের তলব- সব মিলিয়ে একেবারে নাজেহাল অবস্থা হয় বেচারার। হাতের কাছে জমে থাকা কাজগুলো একটু সামলে উঠতে না উঠতেই টেবিলে আসতে শুরু করে নতুন কাজ। সহকর্মীরা তাড়া দিতে শুরু করে। কিছুতেই সে ডেডলাইন মিট করতে পারে না। কাজ শেষ করে উঠতে উঠতে প্রায় রাত ৮টা বেজে যায়। সোহেলের কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে বলে কয়েকজন টিম মেম্বারকেও  রাত পর্যন্ত থেকে যেতে হয়। এই অগোছালো কাজের জন্য আজকাল সহকর্মীরা যেন সব সময় রেগে থাকে তার ওপর। অফিসে  টিমের রেপুটেশনও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রতিদিন সবার অগোচরে কান্না পায় সোহেলের। এত চেষ্টা করেও কেন যে কাজগুলো ঠিকঠাক গুছিয়ে করতে পারে না? এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন সোহেলের কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে তার অগোছালো দৈনন্দিন পরিকল্পনা। ওয়ার্ক প্রেসার যে আমাদের নিত্যসঙ্গী, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই চাপের মোকাবিলার জন্য আমাদের সবারই নিজস্ব স্ট্র্যাটেজি রয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত স্ট্র্যাটেজি যাই হোক না কেন, দৈনন্দিন অফিস পরিকল্পনা অবশ্যই প্রধান উপকরণ হতে পারে। একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মেনে না চললে সহজ কাজও জটিল হয়ে উঠতে বাধ্য। তাই ভালো করে কাজ সম্পন্ন করার জন্য দেওয়া হলো দৈনন্দিন অফিস পরিকল্পনা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রাথমিক পরামর্শ।

 

 

অফিসে পৌঁছানোর পরই কাজে ঝাঁপিয়ে না পড়ে, প্রথমে একটা প্রায়রিটি লিস্ট বানিয়ে নিন। অর্থাৎ গুরুত্ব অনুযায়ী কাজগুলো সাজিয়ে নিন। সব সময় হয়তো প্রায়রিটি লিস্ট পুরোপুরি ফলো করতে পারবেন না, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্নে কাজ সাজিয়ে নিলে সহজে ভুল হবে না।  প্রয়োজনীয় এবং জরুরি- এই দু’ধরনের কাজের মধ্যে পার্থক্য করতে পারা এই পরিকল্পনার প্রধান শর্ত। প্রয়োজনীয় কাজ অবশ্যই করতে হবে কিন্তু জরুরি কাজের গুরুত্ব বেশি। কাজটা সোজা বলেই আগে করতে হবে, এই ধারণা ঠিক নয়। সহজ বা কঠিন নয়, কাজের গুরুত্বটাই প্রাধান্য দিন। একসঙ্গে অনেক কাজ না করে, অল্প সংখ্যক কাজ ভালো করে করার লক্ষ্যে স্থির থাকুন। কোয়ান্টিটির থেকে কোয়ালিটিকে সব সময় বেশি প্রাধান্য দিন। যেটুকু কাজ করবেন, সেটুকু যাতে নির্ভুল হয় সে ব্যাপারে যত্নবান হোন।  নিজের কাজ, কাজের উদ্দেশ্য, কাজের জন্য বরাদ্দ সময় ইত্যাদি প্রত্যেকটি ব্যাপার সম্বন্ধে একটা পরিষ্কার ধারণা রাখুন। নিজের দায়িত্বের ব্যাপারে পরনির্ভরশীল হয়ে থাকাটা কোনো কাজের কথা নয়। কোনো নির্দিষ্ট কাজের দায়িত্ব আপনার ওপর পড়লেই তার বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নিন। কাজটা করতে কতটা সময় লাগবে, ক’দিনের মধ্যে শেষ হবে সেটা মোটামুটি ঠিক করে ফেলুন। অ্যাসাইনমেন্ট পাওয়ার পর সেটা সঙ্গে সঙ্গে লিস্টে ঢুকিয়ে ফেলতে ভুলবেন না। একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, কাজের ক্ষেত্রে কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটিই আসল।

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর