বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

ডিপ্রেশন নয়, চাই মোটিভেশন

শামছুল হক রাসেল

ডিপ্রেশন নয়, চাই মোটিভেশন

আজকাল কি প্রায়ই মনে হয়, অফিসে যা কাজ করছেন তার পুরোটাই কি শুধু সময় নষ্ট? রুটিন কাজে তো উৎসাহ নেই-ই, নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও আজ বিতৃষ্ণা জাগে? কোনো রকমে গোঁজামিল দিয়ে কাজ শেষ করাই এখন আপনার একমাত্র লক্ষ্য? এই প্রশ্নগুলোর একটির উত্তরও যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তা হলে বুঝতে হবে অফিসের কাজের ব্যাপারে আপনার মধ্যে একটা গুরুতর অভাব দেখা দিয়েছে। মোটিভেশন অর্থাৎ কাজ করার চালিকাশক্তি আমাদের ভালো কাজ করার উৎসাহ দেয়।

মোটিভেশনের অভাব শুধু কাজের ইচ্ছাই কেড়ে নেয় তা নয়, ব্যক্তিজীবনেও ডিপ্রেশন ডেকে আনে। কাজের চাপ, নানা জটিলতা, সহকর্মীদের অসহযোগিতা, মনের মতো কাজের অভাব ইত্যাদি কারণে মোটিভেশনের জাঁতাকলে পড়তে পারেন। কিন্তু সুস্থভাবে  কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কী করে ফিরিয়ে আনবেন হারিয়ে যাওয়া মোটিভেশন তা নিয়ে রইল জরুরি পরামর্শ।

কী করবেন : নেতিবাচক চিন্তাভাবনাই মোটিভেশন নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। সে জন্য প্রথমেই নিজের চিন্তাভাবনাগুলো ভালো করে বিশ্লেষণ করুন। প্রতিটি মন্তব্য শোনার পর রিঅ্যাক্ট করার আগে সেটা একবার মনে মনে কাটাছেঁড়া করে নিন। কোনো বিশেষ কথা কি আপনার অপছন্দ? নাকি মন্তব্যকারীকে আপনি একেবারেই পছন্দ করেন না বলেই তার কথা শুনতে বিরক্তি লাগছে? যতটা সম্ভব যুক্তি দিয়ে নিজের মনের ভাবটা বোঝার চেষ্টা করুন। নিজের মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকলে চট করে নেগেটিভ হয়ে ওঠা মুশকিল।  িআপনার ফ্রেন্ড সার্কেল বা কলিগদের মধ্যে যারা ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন তাদের সঙ্গে বেশি ইন্ট্যার‌্যাক্ট করুন। প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ চান। একসঙ্গে অফিসের নানা সমস্যার সমাধান করুন। তারা পরোক্ষভাবে আপনাকে পজিটিভ থিঙ্কিংয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবেন। ফলে কাজের প্রতি উৎসাহ বাড়বে। যেসব কলিগ স্বভাবতই সন্দেহপ্রবণ এবং সমালোচনাপ্রিয়, তাদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কিয়েকটি পজিটিভ পার্সোনাল হ্যাবিট মোটিভেশন বাড়াতে সাহায্য করে। ব্যালেন্সড ডায়েট, ফিটনেস রেজিম, হেলদি লাইফস্টাইল আপনাকে সুস্থ শরীরের সঙ্গে সঙ্গে এক সুস্থ মনেরও অধিকারী করে তোলে। এ ছাড়াও মানসিক সুস্থতার জন্য বাইরের বই পড়া, ইন্টারনেট সার্ফিং, নিজস্ব শখ চর্চা করাও জরুরি। মন সুস্থ না হলে মোটিভেশন কিছুতেই পজিটিভ হতে পারে না। যিখনই মনে হবে আপনি নিজের ওপর বিশ্বাস হারাচ্ছেন, তখন নিজেই নিজেকে সাহস দিন। প্রতিদিন অন্তত একবার নিজেকে বলুন, আমি বিশ্বাস হারাব না। আমি ভালো থাকব। এই সামান্য কথাগুলো আপনাকে নতুন সাহস জোগাতে সাহায্য করবে। কিন্তু কোনো কাজে ব্যর্থ হলেই ‘আমার কপালটাই খারাপ’ বা ‘আমার দ্বারা কিছু হবে না’ ইত্যাদি কথা মুখ দিয়ে যাতে না বেরোয়, সেদিকে সতর্ক থাকুন। বরং ‘এ কাজটা শক্ত কিন্তু আমি পারব’ এই কথাটাই বারবার পুনরাবৃত্তি করুন। কািজ গুছিয়ে করার  চেষ্টা করুন। সব সময় অফিসের কাজের একটা খসড়া পরিকল্পনা ছকে নেওয়ার চেষ্টা করুন। সপ্তাহের শুরুতে বাড়ির-অফিসের কাজের একটা চেকলিস্ট বানিয়ে নিন। সব কাজ ঠিকমতো শেষ হলে নিজেকে ছোট্ট একটা ট্রিট দিন। ছোট ছোট টার্গেট অ্যাচিভ করতে পারলে, আত্মবিশ্বাস আপনাআপনি মজবুত হবে। এই আত্মবিশ্বাসই আপনাকে ভালো কাজের দিকে মোটিভেট করবে। তাই ডিপ্রেশন নয় প্রত্যেকের প্রয়োজন এই মোটিভেশন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর