রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অন-জব প্রেগনেন্সি

শামছুল হক রাসেল

অন-জব প্রেগনেন্সি

একটা সুখবরের আশায় অপেক্ষা করছিল সিফাত। আজ সকালে প্রেগনেন্সি রিপোর্টটি হাতে পেয়ে খুবই খুশি হয় সে। সুখবরটি জানার পর থেকে যে অনুভতিটা শরীরে-মনে খেলা করছে হলফ করে বলা যায় তা ২৮ বছরের জীবনে আগে কখনও হয়নি। সুখবরটি সঙ্গে সঙ্গে ফোনে ওর স্বামী, মা ও শাশুড়িকে জানাল। ফোনে তারা দু’জনেই পরামর্শ দিলেন প্রেগনেন্সির সবেমাত্র ২ মাস। তাই ও যেন ঘনিষ্ঠ কজন ছাড়া আর কাউকেই না জানায়। কিন্তু এখন অফিসে বসে ওর মাথায় নতুন চিন্তা ঢুকেছে, অফিসে কিভাবে কথাটা জানাবে। দেশের অন্যতম একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভের দায়িত্বে রয়েছেন সিফাত। বেশ দায়িত্বপূর্ণ একটি পদ। প্রেগনেন্সির খবর দিলেই স্বাভাবিকভাবে মেটার্নিটি লিভের কথাও এসে যায়। মেটার্নিটি লিভ হিসেবে অফিস থেকে কতদিন ছুটি পাওয়া যাবে, প্রেগনেন্সির সময় অফিস ট্যুরে যাওয়া কতটা সেফ, অফিসের নানা কাজের ফাঁকে খাওয়া-দাওয়া, অনিয়ম, টানা ৯-১০ ঘণ্টা কাজ ছাড়াও অতিরিক্ত কাজ করা— এরকম হাজারো চিন্তা মাথায় এসে হাজির হয় সিফাতের মতো সদ্য প্রেগনেন্ট হওয়া চাকরিজীবী মহিলাদের।  প্রেগনেন্সির অ্যাডভান্সড স্টেজেও অনেক কর্মরত মহিলাই অফিসের কাজ সামলান উৎসাহ ভরে। তবে সহকর্মীদের সাহায্য, শারীরিক প্রস্তুতি এবংভবিষ্যত্ পরিকল্পনারও প্রয়োজন রয়েছে ওয়ার্কিং ওম্যানের প্রেগনেন্সি প্ল্যানিংয়ে।

এ সময় কী করবেন : ♦ প্রেগনেন্সির খবর অফিস কর্তৃপক্ষকে জানানোর কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। অনেকেই আছেন যারা ৩ মাস কেটে যাওয়ার পর অফিসে জানানো সমীচীন মনে করেন। অনেকেই আছেন প্রেগনেন্সির প্রথম দিকেই নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন, যেমন-বমি হওয়া, মাথা ঘোরা বা সামগ্রিকভাবে দুর্বল বোধ করা, সেক্ষেত্রে খবরটা চেপে না রাখাই ভালো। অফিসের বসকে খবরটি জানালে, তবেই তো তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী কাজ অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন, যাতে আপনার অসুবিধা না হয়। তবে শুধু বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশায় প্রেগনেন্সির খবরটি দেওয়া কিন্তু অন্যায় হবে।

♦ প্রেগনেন্সির সময় ধীরে ধীরে এগোতে আরম্ভ করলে শরীরে অস্বস্তি বাড়তে থাকে। এ সময় সহকর্মীদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। মেডিকেল চেক-আপসহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার তারিখ আগে থেকেই অফিসে জানিয়ে রাখুন। যাতে ছুটি পেতে অসুবিধা না হয়। এছাড়া কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়া, ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়া, বাড়তি খাবার খাওয়ার জন্য যে সময়টা লাগছে তার জন্যও ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের নিজের অপারগতার কথা জানিয়ে রাখুন। সাধারণত দেখা যায়, এ বিষয়টিতে সবাই সহানুভূতিশীল হন এবং সাহায্য করার চেষ্টা করেন।

♦ মেটার্নিটি লিভের ব্যাপারে ডাক্তারকে দিয়ে একটা মেডিকেল সার্টিফিকেট তৈরি করে অ্যাপ্লিকেশনসহ অফিসে জমা দিন, যাতে কর্তৃপক্ষ আপনার মেটার্নিটি লিভের জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিতে পারেন। ছুটিতে যাওয়ার মাস দু’য়ের আগেই এই কাজগুলো

করে নেওয়া ভালো।

♦ মেটার্নিটি লিভে যাওয়ার আগে সহকর্মীদের সঙ্গে একটা ছোটখাটো মিটিং করুন। যেসব কাজ আপনি শেষ করে ফেলেছেন, তার তালিকা তৈরি করে সবাইকে বুঝিয়ে দিন। কোথায় কোন ফোল্ডার, ফাইল বা কাগজপত্র রেখেছেন তা জানিয়ে দিন। অসমাপ্ত কাজের তালিকা তৈরি করে দিন যাতে আপনার অনুপস্থিতিতে তাদের কাজ করতে সমস্যায় পড়তে না হয়।

লিভে চলে যাওয়ার পরও ফোনে অবশ্যই অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর