মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

করপোরেট সহকর্মীদের রকমফের

করপোরেট সহকর্মীদের রকমফের

জানেনই তো হাতের পাঁচটা আঙ্গুল সমান হয় না। বিভিন্ন পরিবেশ থেকে আসা সহকর্মীরাও ভিন্ন হবেন, সেটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় একে অন্যের বোঝাপড়া ঠিকমতো না হওয়ায় দূরত্ব বাড়ে সহকর্মীদের মাঝে। কার সঙ্গে কীরকম ব্যবহার এবং কীভাবে মানিয়ে চলবেন তা নিয়ে লিখেছেন- শামছুল হক রাসেল

 

রাগী সহকর্মী

সমস্যা : একটু উনিশ থেকে বিশ হলেই রেগে যান তিনি। তখন আর কিছুতেই তাকে সামলানো যায় না।

সমাধান : রাগী মানেই কিন্তু খারাপ নয়। সবার টেম্পারমেন্ট সমান হয় না। তাই এরকম সহকর্মীর সঙ্গে একটু বুঝে ব্যবহার করুন। কোনো ভুল ধরার থাকলে, কোনো কথা বা ব্যবহারের প্রতিবাদ করতে চাইলে চেঁচামেচি করবেন না। বরং ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন, আপনার সমস্যাটা। আপনিও যদি রেগে যান তাহলে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকবে। তৎক্ষণাৎ বোঝানো সম্ভব না হলে সে সময়ের মতো চুপ করে যান। পরে তার মেজাজ ঠাণ্ডা হলে আপনার মতামত বা বক্তব্য বুঝিয়ে বলুন।

ফাঁকিবাজ

সমস্যা : সব কাজের বোঝা আপনার ওপর চাপিয়ে তিনি নিশ্চিন্তে বসে থাকেন। ফোনে বা ক্যান্টিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটান। ফাঁক পেলেই বাইরে ঘুরে বেড়ান।

সমাধান : একদিন রিভার্স রোল প্লে করুন। অর্থাৎ আপনার সহকর্মীর ওপর সব কাজের ভার চাপিয়ে বেশ কিছুক্ষণের জন্য অফিস চত্বর ছেড়ে কোথাও চলে যান। অফিস শেষ হওয়ার মুখে আবার ফিরে আসুন। একদিন হিমশিম খেলেই তিনি বুঝতে পারবেন প্রতিদিন আপনার কত সমস্যা। আপনি কত ঝামেলা পোহান। দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে।

নেতিবাচক সহকর্মী

সমস্যা : এ চাকরিটা করে কিছুই হওয়ার নয়। যতই খেটে কাজ কর না কেন বসের প্রিয় পাত্রেরই উন্নতি হবে। এ কথাটাই তিনি সারাক্ষণ বলে যান।

সমাধান : অবিলম্বে এড়িয়ে চলুন তাকে। না হলে আপনিও কিছুদিন পর এরকমই নেতিবাচক চিন্তা করবেন। আপনি কেন চাকরিটা করবেন ভেবেছিলেন, আপনার পার্সোনাল গোল কি, সেটা মনে রাখুন। অন্য কারও কথা শুনে প্রভাবিত হবে না।

অতি আত্মবিশ্বাসী

সমস্যা : সহকর্মী হিসেবে এমনিতে ভালোই। সব কাজে সাহায্য করেন, এমনকি ঝাঁপিয়ে পড়ে সব কাজ নিজের কাঁধেও নিয়ে নেন। কিন্তু সমস্যাটা হলো অতিরিক্ত আত্ম বিশ্বাস। প্রায় সব কাজই তিনি শেষ সময়ের জন্য ফেলে রাখেন। এবং অবধারিতভাবে সময়মতো কাজ শেষ করতে পারেন না। ফলে শেষ মুহূর্তে অনেককেই সেই কাজে হাত লাগাতে হয়।

সমাধান : যেহেতু আপনার এবং সহকর্মীর সম্পর্ক ভালো, তাই বিষয়টা নিয়ে সরাসরি কথা বলুন। আপনি কোনো সাহায্য করলে তার কাজ করতে সুবিধা হবে কিনা জেনে নিন। প্রতিদিন অফিসে ঢুকেই সহকর্মীকে একবার মনে করিয়ে দিন তাকে কী কী কাজ করতে হবে, পরিকল্পনা কি? অর্থাৎ সে দিনের জন্য তার অ্যাসাইনমেন্টগুলো কী কী।

নির্লিপ্ত সহকর্মী

সমস্যা : কোনো কিছুতেই কোনো মতামত দেন না। সবার সঙ্গে সদ্ভাব থাকলেও আগ বাড়িয়ে কিছু করতে ইচ্ছুক নন। একা থাকতে পছন্দ করেন।

সমাধান : এ ধরনের সহকর্মীর সঙ্গে বেশি করে কথা বলুন। না হলে তিনি কী ভাবছেন, কী চাইছেন, কিছুই বুঝতে পারবেন না। হতে পারে তিনি আপাত নিস্পৃহ। কিন্তু আসল ঘটনা হয়তো এই যে, সবার মতো তিনিও ভীষণ অ্যাটাচড সহকর্মীদের সঙ্গে। ইন্টার‌্যাক্ট না করলে সে কথা বুঝবেন কী করে? সবাই সমান ভালো বলে-কয়ে হয় না। তাই এ ক্ষেত্রে আপনিই না হয় কিছুটা এগিয়ে গেলেন। সুতরাং সহকর্মী যেমনই হোক আপনার চিন্তা-ধারাটাই আসল।

সর্বশেষ খবর