১০ এপ্রিল, ২০১৮ ২০:৫২

পারিবারিক বঞ্চনা থেকেই ভাতিজা অপহরণ, দুই ফুফুর বিরুদ্ধে মামলা

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি:

পারিবারিক বঞ্চনা থেকেই ভাতিজা অপহরণ, দুই ফুফুর বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটের বিশ্বনাথে ইক্বরা মডেল একাডেমীতে প্লে পড়ুয়া ভাইপো হোসাইন আহমদকে (৫) অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের সময় পুলিশের হাতে আটক হওয়া দুই ফুফুকে আসামি করে মামলা (নং-৮) দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে তার পিতা বকুল মিয়া বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। 

আসামিরা হলেন বকুলের চাচাতো বোন, উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সিংরাওলী গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে আলিমা বেগম (১৬) ও রাইমা আক্তার পূর্ণিমা (১৩)। আলিমা স্থানীয় সিঙ্গেরকাছ পাবলিক বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণি ও রাইমা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয় বলে জানান থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম।

মামলার এজাহারে বকুল মিয়া উল্লেখ করেন, সোমবার বেলা ১টার দিকে ইক্বরা মডেল একাডেমীর প্লে’তে অধ্যয়নরত তার সাড়ে পাঁচ বয়সী ছেলে হোসাইন আহমদকে নিয়ে আসার জন্যে একাডেমীতে যান। সেখানে তাকে না পেয়ে প্রধান শিক্ষককে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, দুপুর ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ফুফু পরিচয় দিয়ে এক মহিলা একাডেমী থেকে তাকে নিয়ে গেছেন। বকুল একাডেমীতে অবস্থানকালেই একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল করে তার ছেলেকে অপরহণ করা হয়েছে জানিয়ে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বিকাশ নাম্বার দেয় অজ্ঞাত মহিলা। 

তিনি তাৎক্ষণিক বিশ্বনাথ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা তাকে সাথে নিয়ে বিকাশ নাম্বারের সূত্র ধরে উপজেলার আল-হেরা শপিং সিটির গ্রামীণ টেলিকম থেকে দুই অপহরণকারী আলিমা ও রাইমাকে আটক করেন। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তার ছেলে হোসাইনকে।

এদিকে, সোমবার দুপুরে ভাইপো হোসাইনকে অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা আদায়ের সময় থানা পুলিশের হাতে আটক হওয়া তার দুই ফুফু আলিমা ও রাহিমা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা ৪ বোন ও ১ ভাই। তাদের পিতা আলাউদ্দিন দ্বিতীয় বিয়ে করে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় বসবাস করছেন। সংসার চালাতে গিয়ে পরের ঘরে ঝিয়ের কাজ করেন আলিমা ও রাহিমার মা হেনোয়া বেগম। তাদের পরিবারের দেখাশুনা করেন চাচাতো ভাই বকুল মিয়া। একই বাড়িতে জায়গা ক্রয় করে বকুল মিয়া ও তার চাচী হেনোয়াকে পৃথক ঘর তৈরী করে দেন আলিমাদের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফুফু। 

তিনি লন্ডন থেকে বকুল মিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে মাঝে মধ্যে আর্থিকভাবে সহযোগীতাও করেন। কিন্তু ফুফুর পাঠানো টাকা থেকে একটি অংশ তাদেরকে দিয়ে বাকি সব টাকা নিজে ভোগ করে আসছেন বকুল মিয়া। এসব থেকেই বকুল মিয়ার প্রতি মনের ভেতর ক্ষোভ জন্ম নেয় আলিমা ও রাহিমার। প্রকাশ্যে বকুল মিয়াকে তারা কিছু বলতে না পারায় একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয় তার ছেলেকে অপহরণ করার। উদ্দেশ্য ছিল অপহরণের পর মু্িক্তপণের টাকা দিয়ে তারা তাদের মায়ের চিকিৎসা করাবে এবং মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যাবে। সেখানে গিয়ে যে কোন গার্মেন্টসে চাকরি করে সংসার চালাবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে সিলেটের বিশ্বনাথ থানা পুলিশ সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী ভাইপোকে অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা আদায়ের সময় হাতেনাতে তার দুই ফুফুকে আটক করে।


বিডি প্রতিদিন/১০ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর