১৯ জুন, ২০১৮ ১৫:৫১

হবিগঞ্জে পানিবন্দী ২০ গ্রামের মানুষ

চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে পানিবন্দী ২০ গ্রামের মানুষ

ফাইল ছবি

অব্যাহত বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী জনপদ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামের ঘরবাড়িসহ রাস্তাঘাট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুশিয়ার নদীর পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছেন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। এছাড়াও অন্তত ২০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্রে। বেড়িবাঁধ নির্মাণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ, ইউনিয়নের মুনসুরপুর, দারকাফন, বাজারচুরা, উমরপুর, রাজনগর, মোস্তফাপুর, মোস্তাফাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাড়ী এবং দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক, জামারগাঁও, রাধাপুর, ফাদুল্লা, কুমারকাদা, কসবা, চরগাঁও ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানসহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর  জীবনযাপন করছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত শনিবার ঈদের দিন থেকে কুশিয়ারা প্রতিরক্ষা বাঁধের পাহাড়পুর, ঢালারপাড়, হুসেনপুর, জামারগাও নিকটে ভাঙন এলাকা দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ করছে। বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন ঈদের আগে এমন বিপদে পড়লেও বাড়ি ছাড়তে চাচ্ছেন না। বেশির ভাগ মানুষ কষ্ট করে নিজেদের ভিটে চৌকি বা মাঁচায় অবস্থান করছেন। 

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বাজার এলাকায় সরকারী নদীর জায়গা প্রভাবশালীরা দখল করে ঘর নির্মাণ ও অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এতে করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামগুলো নদীর বাঁধের পানিতে তলিয়ে গেছে। সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে পানিবন্দী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান ক্ষমতাশীন সরকার দলের এই নেত্রীও।

এলাকাবাসী আরো জানান, সরকারী কোনো ত্রাণ তারা পাননি। পানিবন্দী বেশ কয়েকটি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়রে জন্য ঘরে তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র বাস করছেন। এছাড়া প্রায় ১০টি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। চরম এই দুর্ভোগে তারা এখন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন। 

নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নিলুফা ইসলাম জানান, এলাকার সকল মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। এমন অবস্থায় তাদের পাশের দাঁড়ানো জন্য দাবি জানাচ্ছি। 

সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ, উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান বন্যায় কবলিত এলাকাগুলো পরির্দশন করেছেন।  

আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকদের নিয়মিত খাদ্য দেওয়া হচ্ছে বলে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান জানান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। 

নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী জানান, এক সাথে না দিয়ে ধীরে ধীরে বরাদ্ধ দেওয়ার কারণে স্থায়ীভাবে বাঁধের কাজ করা যাচ্ছে না। তবে বাঁধগুলো নির্মিত হলে এলাকায় বন্যা হবে না বলেও মনে করেন তিনি। 

বিডি-প্রতিদিন/১৯ জুন, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর