২০ আগস্ট, ২০১৮ ১৭:০৮

সিলেটের বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

সিলেট ব্যুরো

সিলেটের বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

সিলেটে স্থানীয় বাস র্টামিনাল দুইটি। একটি কদমতলীতে অন্যটি কুমারগাও। এই র্টামিনালগুলো থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।

সোমবার নগরীর বাস র্টামিনাল গুলো ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া যায়। আর এই নিয়ে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে হচ্ছে কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রুপ নিচ্ছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ, সিলেট-জকিগঞ্জ, সিলেট-বিয়ানীবাজারসহ সবগুলো রুটে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করেছেন যাত্রীরা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের  প্রতিবাদে এবং ন্যায্য ভাড়া পুনর্নির্ধারণের দাবি করেছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন।

নগরীর কুমারগাও বাস টার্মিনালে কথা হয় সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের সাথে, এসময় তিনি বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ-সিলেট রুটে নিম্নমানের বাস সার্ভিস ও মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন এই রুটের হাজার হাজার যাত্রী।

কুমারগাও বাস  টার্মিনাল থেকে থেকে সুনামগঞ্জ সদর বাস  টার্মিনাল পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৬৯ কিলোমিটার। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া দূরপাল্লার বাসের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা। সেই হিসাবে এই রুটে বাস ভাড়া হওয়ার কথা ৯৮ টাকা। একটি সেতুর টোল বাবদ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হলেও তা কোনোভাবেই ১০০ টাকার বেশি হওয়া যুক্তিযুক্ত না।

সিলেটে ঈদের বাজার করতে আসা জাউয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা রুবি বেগম বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ রুটের পরিবহন কোম্পানিগুলো ঈদ উপলক্ষে এই রুটে ভাড়া ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। পরিবহন শ্রমিকরা আমাদের জিম্মি করে রেখেছে। প্রতিবাদ করলে ইজ্জত নিয়ে টানাটানিতে পড়তে হয়। তাই মান-সম্মানের ভয়ে অনেকই নিরবে তাদের অত্যাচার মেনে নিচ্ছেন। আইনশৃঙ্গলা বাহিনী এসব বিষয়ে দশকের ভুমিকা পালন করে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ রুটের বাস চালক আমীর আলী বলেন, ঈদ উপলক্ষে কিছুটা বেশি ভাড়া নেয়া হয়। তবে কাউন্টার থেকে যারা টিকেট ক্রয় করছেন তাদের কাছে থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া ১০০টাকা নেয়া হচ্ছে। টিকেট ছাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে ১২০ থেকে ১৫০টাকা নেয়া হয়।

এ সময় একাধিক যাত্রী বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ, সিলেট-জকিগঞ্জ, সিলেট-বিয়ানীবাজারসহ সবগুলো রুটে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার আলোকে ভাড়া নির্ধারণ করা; এ রুটগুলোর বিভিন্ন স্থানে রাস্তা মেরামত করা; ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা; এ রুটগুলোতে উন্নতমানের বাস সার্ভিস চালু করার জন্য যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীকে বিচারের আওতায় আনা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর বলেন, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা না গেলে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী পরিবহনে নিম্নআয়ের লোকজনের যাতায়াত কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। এতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়বে।

তিনি আরো বলেন,‘গণপরিবহন সংকটের কারণে ও কম ভাড়ার আশায় নিম্নআয়ের লোকজন ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহন, পণ্যবাহী যানবাহন, বাস-ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সারাদেশে বিআরটিএ ও বিআইডব্লিউটিএর মনিটরিং কমিটি গঠন করা হলেও ঈদযাত্রার যাত্রীসাধারণের বাস, লঞ্চ ও বিমানের টিকিট দ্বিগুণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন গুণ দামে কিনতে হচ্ছে,।

অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রীসহ বিরাজমান অনিয়ম-হয়রানি বন্ধ করে যাত্রীসাধারণের নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান  ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।

সিলেট সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, সিলেটের কোনো রুটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। যদি কোথাও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের খবর পাওয়া যায় তাহলে খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্গলা রক্ষার বিষয়টি দেখে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে কিনা সেই বিষয় পরিবহন শ্রমিক নেতারা দেখবেন। এই বিষয়ে পুলিশের কিছুই করার নাই।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর