২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ২১:৫১
পরিবহন ধর্মঘট

এবার বাবার কোলে নবজাতকের মৃত্যু

সিলেট ব্যুরো

এবার বাবার কোলে নবজাতকের মৃত্যু

সংগৃহীত ছবি

ধর্মঘটের কবলে পড়ে এবার চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জে একশিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির নাম জহিরুল ইসলাম (দুই দিন)। সে উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গনিগঞ্জ গ্রামের মইনুল ইসলামের ছেলে। সোমবার দুপুরে গনিগঞ্জ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মইনুল ইসলামের স্ত্রী শেলিনা বেগম রবিবার দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। ঠাণ্ডজনিত কারণে ওই নবজাতক সোমবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ওই পল্লী চিকিৎসক নবজাতক শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।

মইনুল ইসলাম তার নবজাতক শিশুকে নিয়ে যানবাহন যোগে হাসপাতালে যেতে চাইলে পরিবহন শ্রমিক গনিগঞ্জ বাজারে বাধা দেয়। মইনুল ইসলাম বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে শ্রমিকদের অনুরোধ ও কাকুতি মিনতি করলেও তারা কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। 

স্থানীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে শ্রমিকরা। হাসপাতালে নিতে না পারায় সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নবজাতক শিশুটি বাবার কোলেই নিথর হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে মইনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্না চেপে শুধু এটুকুই বলেন, এই কষ্ট কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।

গনিগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন বলেন, আমরা সকাল থেকে শ্রমিকদের হাতে পায়ে ধরে বলেছি, কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি। বাবার কোলে সন্তানের মৃত্যু আমরা কোনভাবেই মানতে পারছি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য কয়ছর আহমদ বলেন, এ নৈরাজ্য কোন ভাবেই মানা যায় না। সরকারের উচিত এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে ধরে ধরে শাস্তি প্রদান করা। অন্যথায় জনগণ এর বিচার করবে। বাবার কোলে নবজাতকের মৃত্যু কত যে বেদনাদায়ক, শুধু মাত্র ওই বাবাই বুঝতে পারছেন।

এর আগে শ্রমিকদের কর্মবিরতির প্রথম দিনে রবিবার মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় সাত দিন বয়সী এক শিশুকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। শ্রমিকরা পথে পথে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়। ফলে অসুস্থ শিশুটিকে হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যায়।

বিডি প্রতিদিন/২৯ অক্টোবর ২০১৮/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর