২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৮:১৭

চট্টগ্রামে বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন ভাষা শহীদদের। শ্রদ্ধা জানানোর কাতারে ছিল রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ অনেকেই। সবার অভিষ্ট লক্ষ্য ও মিলনমেলা ছিল চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

গত মঙ্গলবার রাতে একুশের প্রথম প্রহরেই ঢল নামে শহীদ মিনারে। শিশু-কিশোর, নারী-পরুষ, আবাল-বৃদ্ধ কেউ বাদ যাননি শ্রদ্ধার মিছিল থেকে। এ সময় শহীদ মিনার এবং আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। শহীদ মিনারে গোলাপ ফুল নিয়ে এসেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ নাগরিকও। শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।

গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে নন্দনকানন ফায়ার স্টেশন থেকে বেজে উঠে সময়ের ঘণ্টা। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। নগর পুলিশের একটি চৌকস দল সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এর পর পুস্পস্তবক অর্পণ করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জনসংহতি সমিতির নেতা উষাতন তালুকদার, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনিরুজ্জামান, সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূর ই আলম মিনা, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এবং চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নেতারা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান।

তাছাড়া, নগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, শিল্প পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র, কাস্টমস, ফায়ার সার্ভিস, রেলওয়ে পুলিশ, আরআরএফ কমান্ড্যান্ট, আনসার ও ভিডিপি, বন বিভাগ, সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম কেন্দীয় কারাগার, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড, ইউএসটিসিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

একুশ স্মরণ পরিষদ

জামাল খান ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একুশ স্মরণ পরিষদ আয়োজিত ‘স্মরণে ২১’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ‘সালাম, বরকত, রফিকরা বুকের রক্ত না দিলে বাংলায় কথা বলতে পারতাম না। স্বাধীন রাষ্ট্রের অঙ্কুর বায়ান্নে রোপিত। ১৯৫২ সালে একুশের প্রথম কবিতা ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ আমার বাবা রাষ্ট্রদ্রোহের ঝুঁকি নিয়ে রাতে কোহিনূর প্রেসে ছাপিয়েছিলেন। বাবাকে গ্রেফতার করতে এসেছিল। তখন ম্যানেজার বলেন, মালিক কিছু জানেন না, আমিই ছাপিয়েছি। তখন তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ আমাদের প্রেস বন্ধ করে দিয়েছিল। একুশের ইতিহাসে সামান্য হলেও আমাদের অংশগ্রহণ আছে, এজন্য আমরা গর্ববোধ করি।’  

একুশ স্মরণ পরিষদের চেয়ারম্যান শৈবাল দাশ সুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, খাস্তগীর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হাসমত জাহান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সাহাব উদ্দিন।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর