২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ২০:৫৭

অন্তহীন অভিযোগ চমেক হাসপাতালের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

অন্তহীন অভিযোগ চমেক হাসপাতালের বিরুদ্ধে

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা থেকে স্বজনকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আসেন মোহাম্মদ জামাল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘রোগীর ওষুধ, জরুরি ইঞ্জেকশন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও হাতে টাকা গুঁজে না দিলে ঢুকতে দেন না আনসার সদস্য ও গেটম্যানরা। ওয়ার্ডের গেটকিপারকে চা খাওয়ার জন্য ৬০ টাকা নিলেও ঢুকতে দেননি।’

কুতুবদিয়া থেকে আসা রোগী মো. ইদ্রিসের অভিযোগ, ‘আমার স্ত্রী নাসিমা বেগমের ডেলিভারির সেলাই জোড়া লাগেনি এক মাসেও। এখনো পুঁজ বের হচ্ছে। আমি অনেক কষ্ট পাচ্ছি।’  
আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চমেক হাসপাতালের আয়োজিত গণশুনানিতে এভাবে অভিযোগ করেন রোগীরা। হাসপাতালে দ্বিতীয় তলায় আয়োজিত গণশুনানিতে ভর্তি থাকা রোগীরা সরাসরি এসব অভিযোগ করেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক বিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিনসহ বিভাগীয় প্রধানগণ। চমেক হাসপাতালের সেবা ও রোগীদের অভিযোগ নিয়ে আগামী ২৭ মার্চ বেলা ১১টায় দুদকের গণশুনানি হবে। এর  আগে দুদক মহাপরিচালক হাসপাতাল পরিদর্শন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।    

গণশুনানিতে বাঁশখালীর কালীপুর থেকে আসা নাসিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন ‘অব্যবহৃত স্যালাইন দোকানে ফেরত দেওয়া যাবে কিনা জানতে চেয়েছিলাম। এ কথা জিজ্ঞেস করাতে ওয়ার্ডের আয়া আমাকে চুল ধরে বের  করে দেবেন বলে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। খুব অপমানিত হয়েছি। যদি মেয়ে কিছুটা সুস্থ হতো তাহলে এখনই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতাম।’  
নাসিমা বেগমের এই অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ওই আয়াকে চিহ্নিত করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একজন নারী দালালদের দৌরাত্ম্য উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে অভিযোগ করে বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, রক্ত সংগ্রহ ও ওষুধপত্র কেনাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে দালালদের হাতে রোগীরা জিম্মি হয়ে পড়ছেন।’      

বিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা গণশুনানির আয়োজন করেছি। অভিযোগকারীদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের  কাছে রোগীদের স্বার্থই অগ্রাধিকার পাবে। আমরা তিনটি অভিযোগ বাক্স রেখেছি। সেখানেও অভিযোগ দেওয়া যাবে।’  
তিনি বলেন, ‘আমরা দালাল নির্মূলের চেষ্টা করছি। আমাদের নিরাপত্তাকর্মীর সংকট আছে। তবুও আমরা পুলিশ ও আনসারের সহায়তা নিচ্ছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একা দালালমুক্ত করতে পারবে না। তাই রোগীর স্বজন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, চসিক, সাংবাদিক সবাইকে সচেতন হতে হবে, দালালদের প্রতিরোধ করতে হবে।’ 

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে চমেক হাসপাতালে। ভারতের স্যান্ডোরের সঙ্গে পিপিপি’র অধীনে আমাদের রয়েছে অত্যাধুনিক ডায়ালাইসিস সেন্টার। যেখানে ১০ হাজার সেশন আমরা ৪২০ টাকায় দিতে পারছি। এছাড়া কিডনি ওয়ার্ডে পুরোনো নয়টি ডায়ালাইসিস মেশিনও সচল আছে। ফ্রি সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরি মেনে চলতে হয়। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ সংখ্যক সেশন কম ফি’তে বা বিনামূল্যে দিতে।’ 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর