২১ মার্চ, ২০১৮ ১০:০৬

প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় পটিয়াবাসী

সাইদুল ইসলাম, পটিয়া (চট্টগ্রাম) থেকেঃ

প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় পটিয়াবাসী

দীর্ঘ ১৭ বছর পর আজ চট্টগ্রামের পটিয়া কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভায় বক্তব্য দিবেন- এমন প্রত্যাশায় স্থানীয় সাধারণ মানুষসহ দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ও চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা অপেক্ষায় আছেন। সকাল থেকেই ধীরে ধীরে জনসভার মাঠে আসতে শুরু করেছেন দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ। 

চট্টগ্রাম নগরীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে সাজ সাজ রব দেখা গেছে। উৎসাহ-উদ্দীপনা চলছে নেতা-কর্মীদের মাঝে। পটিয়াসহ দক্ষিনের সব রাস্তা-ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্নও করা হয়েছে। এ জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামুলক বক্তব্যও প্রদান করবেন। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে সরকারের নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প ও সফলতার চিত্রও তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। 

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কর্ণফুলী নদীতে কালুরঘাট সেতু, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে বন্দর স¤প্রসারণ, দক্ষিণ চট্টগ্রামে একটি বিভাগীয় মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (আরাকান সড়ক) চারলেন করার সরকারি ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়নসহ নানাবিধ দাবি তুলে ধরবেন দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী। তাছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা জনসভাস্থলে রয়েছেন। রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষ টিমও।

পটিয়ার ইকবাল হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর আমাদের এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আসছেন, সেটা আনন্দের। এক নজর দেখার অপেক্ষায় আছেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের হাজার হাজার সাধারণ মানুষও। দোয়া করি দেশ ও জনগণের সেবায় আরো এগিয়ে যেতে পারেন তিনি। তারঁ নেতৃত্বে আগামী দিনেও দেশের উন্নয়নে আমরা এক এবং অভিন্ন হিসেবে থাকতে চাই।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসানো হয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৯০টি সিসিটিভি। সেইসাথে নৌকার আকৃতির ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩২ ফুট প্রস্তের বিশাল জনসভার মঞ্চও তৈরি করা হয়েছে। বক্তব্য শোনার সুবিধার্থে মাঠের বাইরেও কয়েক কিলোমিটার এলাকায় মাইকের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এ মাঠেই ২০০১ সালে নির্বাচনী জনসভা করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ জনসভা থেকেই ৪২টি প্রকল্প উদ্বোধন ও বিত্তি প্রস্তর স্থাপনও করা হবে।

৪২ প্রকল্প উদ্বোধন করবেনঃ 
এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামে বসেই নগর এবং গ্রামের ৪২টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। আজ বিকালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিশাল জনসভা থেকেই প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশস্থল থেকে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং ২৮টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। 

উদ্বোধন করা হবে এমন প্রকল্পের মধ্যে আছে, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ফ্লাইওভার উদ্বোধন, চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবন, কালুঘাট-মনসার টেক জাতীয় মহাসড়কে (এন-১০৭) ৮ কিলোমিটারের ৮১ দশমিক ৯৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে পিসি গার্ডার সেতু (মিলিটারি সেতু), পটিয়া-চন্দনাইশ-বৈলতলী সড়কের ৩৪৮ দশমিক ১২ মিটার দৈর্ঘ্যরে খোদার হাট সেতু, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি স্কুল এন্ড কলেজের আইসিটি সুবিধাসহ পাঁচতলা একাডেমিক ভবন, হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের আইসিটি সুবিধাসহ পাঁচতলা একাডেমিক ভবন, খলিল মীর কলেজের আইসিটি সুবিধাসহ চারতলা একাডেমিক ভবন, পশ্চিম বাশখালি উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজের আইসিটি সুবিধাসহ চারতলা একাডেমিক ভবন, ফটিকছড়ির হেয়াকো বনানী কলেজে আইসিটি সুবিধাসহ চারতলা একাডেমিক ভবন, রাঙ্গুনিয়া মহিলা কলেজের আইসিটি সুবিধাসহ পাঁচতলা একাডেমিক ভবন, মিরসরাই প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজে আইসিটি সুবিধাসহ চারতলা একাডেমিক ভবন, নাজির হাট মাইজভান্ডার সড়ক এবং শেখ রাসেল ভাস্কর্য ও পটিয়া দক্ষিণ ভূর্ষি শেখ রাসেল মঞ্চ।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনঃ 
ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হবে- লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর তীর কালুরঘাট থেকে চাক্তাই পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার সাঙ্গু এবং ডলু নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর সদর ঘাট থেকে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত ড্রেজিং, অনন্যা ৩৩/১১ কেভি জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, কল্পলোক ৩৩/১১ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, মইজ্জ্যারটেক ৩৩/১১ কেভি এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, এফআইডিসি কালুরঘাট ৩৩/১১ কেভি এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, অক্সিজেন ৩৩/১১ কেভি এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, কাট্টলি ৩৩/১১ কেভি এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, মনসুরাবাদ  ৩৩/১১ কেভি এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ, ১৮০ দশমিক ৩৭৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে জরাজীর্ণ কালারপোল সেতু পুনঃনির্মাণ, কেরানিহাট-সাতকানিয়া-গুণাগুরি জেলা মহাসড়ক প্রশস্থকরণ, পটিয়া আনোয়ারা-বাশখালি টইটং আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ, বড়তাকিয়া থেকে মিরসরাই ইকনোমিক জোন সংযোগ সড়ক নির্মাণ, বারৈয়ারহাট হেয়াকো-নারায়ন হাট-ফটিকছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ, পটিয়ার রাজঘাটা শ্রীমাই খালের ওপর ৬৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, ফটিকছড়ির নাজির হাট-জিসি-কাজির হাট সড়কে মন্দাকিনি খালের ওপর ৫৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, পটিয়ায় পিটিআই একাডেমিক ভবন নির্মাণ, সীতাকুন্ড টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ওয়ার্কশপ বিল্ডিংসহ পাঁচতলা একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, সরকারি মহিলা কলেজে ১০০ শয্যার ছাত্রী নিবাস নির্মাণ, আগ্রাবাদ মহিলা কলেজে আইসিটি সুবিধাসহ পাঁচ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, পোস্তারপাড় চসিক মহিলা কলেজে আইসিটি সুবিধাসহ পাঁচ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ, পটিয়া পৌর মাল্টিপারপাস কিচেন মার্কেট নির্মাণ, হর্টিকালচার সেন্টার এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নির্মাণ।

 

বিডি প্রতিদিন/২১ মার্চ ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর