৩০ এপ্রিল, ২০১৮ ১৯:০৫
উত্তাল রেলওয়ে শ্রমিক লীগ

নেতাদের বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

নেতাদের বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার

ঝিমিয়ে পড়া নেতা-কর্মীদের মাঝে চাঙ্গা ভাব তৈরি করতে মেয়াদোত্তীর্ণ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রেলঅঙ্গনে। নতুন কমিটি গঠনের তৎপরতাসহ নানাবিধ দৃশ্যমান কর্মসূচি দেখা যায়নি দীর্ঘদিন ধরেই। 

প্রায় ১২ বছর ধরেই কমিটি না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে শাখা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা। করা হয়েছে পাল্টা-পাল্টি বিশেষ সাধারণ সভা ও বর্ধিত সভাও। এতে পক্ষে-বিপক্ষের সর্মথকদের মারধরের পাশাপাশি করা হয়েছে শীর্ষ নেতাদের বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কারও। 
এসব বিষয় নিয়ে সিরাজুল ইসলামের পক্ষে চট্টগ্রামের সিআরবিসহ বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ঘোষিত রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কার্যকরি সভাপতি হায়দার আলী সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে আজ সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনেরও আয়োজন করেছে।

রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যানারে বিশেষ এক সাধারণ সভা চট্টগ্রামে আয়োজন করেন নেতা-কর্মীরা। এতে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ১২ বছর আগের মেয়াদোত্তীর্ণ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়। এ নতুন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে এড হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলামকে। এটি ঘোষণার পরপরই তৎপর হয়ে উঠে কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতারা। কমিটি ঘোষনার পরই ২৯ এপ্রিল ঢাকায় বর্ধিত সভা শেষে হাবিবুর রহমান আখন্দ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ঘোষিত কমিটির সভাপতি হায়দার আলী ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে বহিস্কার করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হায়দার আলী ও সিরাজুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন শাখার তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের দাবি থাকা সত্তে¡ও কোন ধরণের কেন্দ্রীয় সম্মেলন বা নতুন কমিটিও গঠন করা হয়নি। সেই ১২ বছরের আগের কমিটির ৩৫ সদস্যের মধ্যে ৫ জন বর্তমানে চাকুরিতে কর্মরত আছেন। এতে রবিউল হোসেন, নুরুল হকসহকয়েকজন মারা গেছে ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমনা আখন্দসহ ২৫ জনের মতো অবসরে চলে গেছেন। তারাই দীর্ঘদিন ধরেই কমিটি না হওয়ায় ক্ষোভের মধ্যে ছিল নেতা-কর্মীরা। আরো বলেন, নতুন নেতৃত্ব তৈরি না করে শুধুমাত্র নিজেদের আখের গোছানোর জন্য বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বহাল তবিয়তে ছিল সংগঠনের নেতারা। এ সম্মেলনে সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদ হাবিবুর রহমান আখন্দকে বহিস্কার এবং শেখ লোকমান হোসেন ও গোকুল চক্রবর্তীকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাছাড়া ঢাকায় অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভাকে অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যানও করা হয়েছে।

নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়েছে বলে দাবি করে ঘোষিত কমিটির মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকায় সে বর্ধিত সভা করা হয়েছে সেটি অবৈধ। সংগঠনের শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে হাবিবুর রহমান আখন্দকে বহিস্কার ও দুজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষমতা ধরেই রাখতে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি করে আসছে র্দীঘদিন ধরেই। সাধারণ নেতা-কর্মীরা সোচ্ছার হয়ে উঠার পর সেই নেতাদেরও ঘুম ভেঙ্গে যায়। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কমিটি করা হয়েছে। কেউ সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকলে আগামীকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে আগামিতে এ সংগঠনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে বলে জানান তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের প্রধান উপদেষ্টা সিরাজ উল্লাহ বলেন, শ্রম আইন মোতাবেক দুই বছরের বেশি  কোনো কমিটির মেয়াদ হয় না। কমিটির অনুমোদন দেয় সম্মেলন। শীঘ্রই সম্মেলন করা হবে।

এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নবগঠিত কমিটির কার্যকরী সভাপতি মো. হায়দার আলী। তবে এ বিষয়ে জান হাবিবুর রহমান আকন্দকে একাধিকবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

সর্বশেষ খবর