২১ মে, ২০১৮ ১৬:৫৫

প্রিন্ট হচ্ছে না পাসপোর্ট!

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

প্রিন্ট হচ্ছে না পাসপোর্ট!

দিনের পর দিন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে পাসপোর্টের জন্য চট্টগ্রামের একাধিক আবেদনকারী। ঢাকায় প্রিন্টার মেশিনে কারিগরি ত্রুটির কারণে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ১২ হাজারেরও অধিক পাসপোর্টের আবেদনকারী। এসব পাসপোর্ট নিতে প্রতিদিন শতশত আবেদনকারী চট্টগ্রামের পৃথক দু'টি পাসপোর্ট অফিস বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস মনসুরাবাদ এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পাঁচলাইশে গিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষার প্রহর গুণছেন। 

নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে না পারায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতিসহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগছেন চট্টগ্রামের পাসর্পোট অফিসের কর্মকর্তারাও। তবে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরেই এসব জট থাকলেও অসুস্থ, হজ্জ্ব যাত্রী, প্রবাসীদের জরুরী পাসপোর্টগুলো দ্রুত দেয়ার পাশাপাশি রমজান মাসের মধ্যেই ত্রুটি কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর থেকেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট ডেলিভারি পাবেন বলে জানান চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পাঁচলাইশের উপ-পরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম।

তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পাসপোর্টের এসব ভোগান্তি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমাধানের চেষ্টা চলছে। ঢাকায় ইতিমধ্যে দ্রুত কাজ চলছে। প্রিন্টার মেশিনের কারণে চট্টগ্রামের দুটি পাসপার্টে অফিসে প্রতিদিন আবেদনকারিরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে আসছেন। বর্তমানে মুনসুরাবাদ ও পাচঁলাইশে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার পাসপোর্ট এসব কারণে আটকে আছে। তবে হজ্জ্ব যাত্রী, অসুস্থ রোগী ও প্রবাসীসহ নানাবিধ জরুরী পাসপোর্টগুলো বিশেষ বিবেচনায় এনে তালিকা তৈরি করে ঢাকার সাথে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত ডেলিভারি দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাছাড়া চলতি রমজান মাসের মধ্যেই এসব জটিলতা থেকে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আলম নামের এক প্রবাসী আবেদনকারি বলেন, পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় চলে গেলেও দফায় দফায় অফিসে এসে পাসপোর্ট পাওয়া যায়নি। এতে ভিসার নির্দিষ্ট সময় চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। দ্রুত পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে ইতিমধ্যে ঢাকায় তাগাদাও দেয়া হয়েছে। তবে এখন শুধু অপেক্ষায়...

সিরাজ মিয়া নামের আরেক প্রবাসী বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট না আসায় ভিসার মেয়াদ চলে যাওয়ার আশংকায় অফিসিয়ালভাবে দ্রুত যোগাযোগ করেছি। এতে দ্রুত সময়ে পাসপোর্ট পেয়েছি। কয়েকদিনের মধ্যেই দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি। তবে বর্তমানে পাসপোর্ট কর্মকর্তাদের আন্তুরিকতা থাকলেও মেশিন কষ্টের কারণে শত শত আবেদনকারি ভোগান্তিতে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

চট্টগ্রামের পাসপোর্ট অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় প্রিন্টার মেশিন নষ্টের কারণে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে ৬ হাজার এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পাঁচলাইশে সাড়ে ৬ হাজার পাসপোর্ট আবেদন নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকদের ডেলিভারি দিতে পারেনি। জরুরি প্রয়োজন হওয়ায় পাসপোর্ট নিতে আবেদনকারীরা প্রতিদিন এ দুটি অফিসে ধর্না দিয়েও কোন আসার আলো দেখছে না আবেদনকারীরা। সাধারণ ভিত্তিতে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত ২১ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মূলত ৩০ থেকে ৪৫ দিন এবং জরুরি ভিত্তিতে ৬ হাজার ৯০০ টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও আবেদনকারীরা ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পায়। 

তাছাড়া বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ভিসা সজহীকরণ করায়, পাসপোর্টের আবেদনও বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রিন্টার মেশিনগুলো সচল হয়েছে। রমজান মাসের মধ্যে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন চট্টগ্রামের পাসপোর্ট কর্মকর্তারা।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর