১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৮:০১

অবশেষে রেলের সেই শতকোটি টাকার জায়গা উদ্ধার

ছিল ইয়াবা-মাদকসহ নানাবিধ অবৈধ আস্তানা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

অবশেষে রেলের সেই শতকোটি টাকার জায়গা উদ্ধার

অবশেষে চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কোতোয়ালীর আইসফ্যাক্টরী রোড এলাকার রেলের সেই শতকোটি টাকার জায়গা উদ্ধার করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ২০ একরের উপরে রেলের জায়গার উপর অবৈধভাবে গড়ে উঠে কাচা-পাকা ৫ শতাধিক বস্তিঘর ও শত শত দোকান। 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণ ঘেষা এ স্থানের অধিকাংশ জায়গাই ছিল ইয়াবা, হিরোইন, পতিতালয় ও মাদকসহ নানাবিধ অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে। দীর্ঘদিন ধরেই নানা কারণে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন।

বুধবার সকাল থেকে এসব উচ্ছেদ দেখে স্থানীয়রা অনেক খুশী ও স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে। এসময় উপস্থিত ছিলেন রেলের বিভাগীয় ষ্টেট কর্মকর্তাসহ রেলের ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। এর আগে রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এমপি ও রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেনসহ উর্ধ্বতন রেলের কর্মকর্তারা অবৈধ স্থাপনাসহ এসব বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছিল। এ বিষয়ে সম্প্রতি রেলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা বরাবরে উচ্ছেদসহ জায়গাটি সংরক্ষণের জন্য মো. রিজোয়ান ছিদ্দিক নামের এক ব্যক্তি আবেদন করেছিলেন।

আইয়ুব আলী নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই রেলের জায়গায় অবৈধভাবে স্থাপনা করে রেখেছিল মাদক সিন্ডিকেটের একটি গ্রুপ। অবৈধভাবে রাতারাতি গড়ে উঠে অপরাজ্যের স্বর্গরাজ্য হিসেবে রেলের জায়গা। এতে বসবাস করে চট্টগ্রামের ইয়াবা-মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম ব্যবসায়ীরাও। রয়েছে বিভিন্ন উপ-গ্রুপও। দফায় দফায় কোন্দলের কারণে বসবাস করতে পারেন না রেলের স্টাফরা। স্থানীয়দের মধ্যে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় আতংক। এক কথায় রেলওয়ের কর্মচারিরাসহ স্থানীয়রা জিম্মি অবস্থায় বসবাস করছেন। তবে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে এসব উদ্ধারকৃত রেলের জায়গায় দ্রুত প্রাচীর না দিলে আবারও স্থাপনা গড়ে উঠতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন কলোনীতে প্রায় ২৫০টি রেলওয়ে কর্মচারী প্রায় ২/৩ বছর ধরেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাস্তুহারা কলোনীতে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা, যৌন ব্যবসা, জুয়া ইত্যাদি কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। বস্তির লোকজনের আছে বিশাল কিরিচ বাহিনীও। বাধ্য হয়ে বেশিরভাগ কর্মচারী এলাকা ছেড়ে চলেও গেছেন। এটি এখন সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে এলাকায় পরিণত হয়েছে। ২০০২ সালে বরিশাল কলোনী উচ্ছেদের পর অস্ত্র, মাদক, জুয়া, পতিতাসহ সকল ব্যবসাই এখন বাস্তুহারা থেকে পরিচালিত হয়। রেলওয়ের জমিতে স্থাপিত হওয়ার কারণে ওই কলোনী সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। 


বিডি প্রতিদিন/১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর