২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ২১:৪৪

বিনামূল্যের বই খোলা বাজারে বিক্রি!

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

বিনামূল্যের বই খোলা বাজারে বিক্রি!

ফাইল ছবি

বিনামূলে মাধ্যমিকের বিতরণের জন্য দেয়া বই চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাসহ নগরীর বিভিন্ন বইয়ের দোকানে খোলা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিহ্নিত অসাধু শিক্ষক-কর্মচারীরা মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বিভিন্ন বইয়ের দোকানে সরবরাহ করছে। এসব চক্র নানাভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন ‘বড় ভাই’ বা নেতার নাম ব্যবহার করে কৌশলে রক্ষার চেষ্টা করে থাকে। 

সর্বশেষ নগরীর একটি দোকান থেকে বিভিন্ন শ্রেণি বা ক্লাসের ২৮৩টি সরকারি বই উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় প্রকাশ বিচিত্রার মালিকের ভাই দেবাশীষ তালুকদার জুয়েলকে (২৮) আটক করে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের পরির্দশক ইলিয়াছ খান।

তিনি বলেন, রবিবার রাতে আন্দরকিল্লা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বই উদ্ধার ও মালিকের ভাইকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি বই ব্যবসায়ীরা, শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে এসব বই সংগ্রহ করে বেশি দামে বিক্রির জন্য।

ধারণা করা হচ্ছে, কিছু অসাধু শিক্ষক-কর্মচারী স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি দেখিয়ে বইগুলো সংগ্রহ করার পর খোলা বাজারে বিক্রি করে। তবে এসব বই কিভাবে, কাদের কাছ থেকে আনা হয় সে বিষয়ে জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, জুয়েলের বড় ভাই ও দোকান মালিক দেবাশীষ তালুকদার ওরফে আশিষ পলাতক। তাকে পেলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। তাছাড়া চট্টগ্রাম ছাড়াও আশপাশের কিছু জেলা থেকে বই আসে খোলা বাজারে। আমরা তার কিছু প্রমাণও পেয়েছি। জুয়েলের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে না করা শর্তে স্থানীয় ও একাধিক দোকানদার বলেন, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারীদের কাছ থেকে তারা বইগুলো সংগ্রহ করে কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রিয় করনি। এসব বই পরিচিত ব্যক্তি ছাড়া তারা কারও কাছে এসব বই বিক্রিও করেন না। বিনামূল্যের প্রতিটি বই ২০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। তাছাড়া শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরেই দায়িত্বে থাকায় নানাবিধ কৌশলে ব্যাপক অনিয়মের ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত।

জানা যায়, রবিবার রাতে উদ্ধারকৃত উদ্ধার করা বইগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথম শ্রেণির ৩০টি বাংলা বই, ১৭টি গণিত, ১৮টি ইংরেজি, দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩টি বাংলা, পাঁচটি অঙ্ক, ১৩টি ইংরেজি, চতুর্থ শ্রেণির ১৮টি বাংলা, ১৪টি অঙ্ক, ১৫টি ইংরেজি, সাতটি বিজ্ঞান, চারটি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি এবং পঞ্চম শ্রেণির ১২টি বাংলা বই। আরও রয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির তিনটি বিজ্ঞান, চারটি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, নবম-দশম শ্রেণির ১৬টি বিজ্ঞান, ছয়টি করে উচ্চতর গণিত, ভূগোল ও পরিবেশ এবং তিনটি করে রসায়ন বই। একইভাবে মাদরাসার শিক্ষা বোর্ডের ইবতেদায়ি প্রথম শ্রেণির ৯টি করে অঙ্ক ও বাংলা, দ্বিতীয় শ্রেণির ছয়টি করে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ও পঞ্চম শ্রেণির ১২টি করে ইংরেজি ও বিজ্ঞান বইসহ বই উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।  

বিডি প্রতিদিন/২১ জানুয়ারি ২০১৯/আরাফাত

সর্বশেষ খবর