বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘অসহযোগ’ আন্দোলনের প্রথম দিনে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ছিল গণপরিবহন শূন্য। জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া বন্ধ ছিল নগরীর বেশির ভাগ দোকান ও শপিংমল। সড়কে কোনো ধরনের গণপরিবহন নেই বললেই চলে।
অন্যান্য সময়ে রিকশার দাপট থাকলেও এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। সড়কে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি রিকশা থাকলেও তা ছিল হাতেগোনা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা।
রবিবার নগরীর শাহ আমানত সেতু, নিউ মার্কেট, কাজীর দেউড়ি, চকবাজার, বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের ২৫টি রুট রয়েছে। প্রায় সব কয়টি রুটে যান চলাচল করছে না। তবে তা আমাদের সংগঠনের কোনো সিদ্ধান্ত নয়। চলমান পরিস্থিতিতে নিজেদের জানমালের কথা বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিকরা যানবাহন চালাচ্ছেন না। সড়কে যাত্রীও নেই, ফলে গাড়ি সড়কে চললেও তো লোকসান গুণতে হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কে পোশাক কারখানার শ্রমিক থেকে শুরু করে অন্যান্য কর্মস্থলগামী লোকজনের ভিড়। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় তারা সড়কে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষও।
তারা বলছেন, দেশের এমন পরিস্থিতির কারণে তাদের এখন না খেয়ে মরার দশা। তাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান চান তারা। সকাল থেকে কিছু টেম্পু ও কিছু বাস চলাচল করলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা স্থবির হয়ে যায়। সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নিউ মার্কেট মোড়ে জমায়েত হতে থাকলে ধীরে ধীরে তার প্রভাব পড়ে নগরজুড়ে। শুধু রিকশা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনের দেখা মেলেনি।
জানা গেছে, চলমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার হাটহাজারী-নিউমার্কেট রুট, রাউজান-নিউমার্কেট, ফটিকছড়ি-নিউমার্কেট রুটসহ ২৫টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন শ্রমিকরা। এ ছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা-চট্টগ্রাম, পটিয়া-চট্টগ্রাম, লোহাগাড়া-চট্টগ্রামসহ ১৯ রুটে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। একই অবস্থা নগরের বিভিন্ন রুটে চলাচল করা গণপরিবহনেও। হাতেগোনা কয়েকটি রুট ছাড়া প্রায় রুটে বন্ধ যান চলাচল।
এদিকে চলমান আন্দোলনে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন শিক্ষকদের হাজিরা দিতে হচ্ছে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে। গণপরিবহন কম থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চাকরি বাঁচাতে তাদের কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এর বাইরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও একই চিত্র।
বিডি প্রতিদিন/এমআই