৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ১৮:১১

মেয়র নাসিরের চ্যালেঞ্জ

'চুল পরিমাণও ত্রুটি করিনি'

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

মেয়র নাসিরের চ্যালেঞ্জ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন দায়িত্বগ্রহণের ১০০ দিনের মূল্যায়ন অনুষ্ঠানে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জ করে বলছি, দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে এক চুল পরিমাণও ত্রুটি করিনি। অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়নি, চালিয়েছি শুদ্ধি অভিযান, বন্ধ করেছি বিভিন্ন বিভাগের অন্যায়। শক্ত হাতে মনিটরিং করা হচ্ছে সব কিছু।

সোমবার দুপুরে চসিকের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে ‘দায়িত্বগ্রহণ পরবর্তী ১০০ দিবসে গৃহীত উন্নয়ন ও সেবা কার্যক্রম অবহিতকরণ নিমিত্তে’ সংবাদ ব্রিফিং তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম, সচিব রশিদ আহমদ। লিখিত বক্তব্য শেষে মেয়র সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

বছরজুড়ে থাকা যানজট প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ ব্যর্থ। কিছু কিছু সড়ক আছে, যেখানে যানজট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেসব মোড় ও সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এটি নিরসনে আমি খুব শীঘ্রই সিএমপি কমিশনার ও ট্রাফিক বিভাগকে নিয়ে একটি সভা করব।

ফুটপাত প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বিষয়টি আমাদেরকে খুব ভাবায়। এটি নিয়ে আমরা পরিপূর্ণ একটি পরিকল্পনা করেছি। নির্দিষ্ট একটি ফ্রেমের মধ্যেই চলে আসবে হকাররা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আগামী ২ ডিসেম্বর হকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। আমার বক্তব্য স্পষ্ট- ফুটপাথ পথচারীদের জন্য। এটি তাদের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে হকারদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও আমরা বিবেচনা করেছি।

আইন-শৃঙ্খলা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত বলে দাবি করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্প্রতি আমি সিএমপি কমিশনার, গোয়েন্দা সংস্থা সমুহের চট্টগ্রাম প্রধান ও র‌্যাব প্রধানদের নিয়ে একটি সভা করেছি। সেখানে আমার অবস্থান পরিস্কার করে বলেছি, আইন স্বাভাবিক গতিতে চলবে। যতক্ষণ এই চেয়ারে আছি ততক্ষণ আমি কাউকে চিনি না। যে যে দলেরই হোক, অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় নয়।  

আবর্জনা নিরসনে নতুন নিয়ম প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির বলেন, গত ২২ আগস্ট থেকে এ ব্যাপারে রুটিন করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ, ২০ গাড়ির মাধ্যমে দৈনিক মাইকিং, ইতোমধ্যে ২০ লাখ লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে নগরবাসী থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছি না। তবু আমরা হতাশ নই, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি লিফলেট বিতরণ করা হবে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে নিয়ম না মানলে স্পট জরিমানা, মামলা ও আটক পর্যন্ত করা হবে।   

দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজের উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন বিভাগ ও শাখায় কাজে অবহেলা, অনিয়ম, উদাসীনতার কারণে ৩১ কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত, শাখা প্রধান নিয়োগে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করা, রাতে আবর্জনা অপসারণ কাজ তদারককারীদের মোটরসাইকেল প্রদান, ২টি পে-লোডার ভাড়া করা, ২৫টি এসএস কনটেইনার কেনা, পরিচ্ছন্ন বিভাগের সবাইকে রেইন কোট ও সেবকদের রেডিয়েন্ট জ্যাকেট দেওয়া, শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৪০ জনকে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেলের ব্যবস্থা নেওয়া, শিক্ষা নীতিমালার খসড়া তৈরি, চিকিৎসা ফি ৩০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে।

চসিক মেয়র বলেন, দায়িত্বগ্রহণ করে চসিকের বন্ধ রং ফ্যাক্টরি চালু করা, নগর ভবনে ফাইবার অপটিকের মাধ্যমে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (এলএএন) স্থাপন, জ্বালানি অপচয় রোধে ৪০টি গাড়িতে ভ্যাহিক্যাল ট্রেকিং সিস্টেম চালু, আদালত ভবনকে ওয়াইফাই জোনে রূপান্তর, ১ লাখ ৪২ হাজার হোল্ডিংয়ের ডাটাবেজ হালনাগাদ, ১১ হাজার হোল্ডিংয়ের নতুন ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু, আগামী ৬ মাসের মধ্যে ১৬টি মোড় এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ওয়াইফাইয়ের আওতায় আনার পরিকল্পনা আছে।

এই সময়ে চসিকের আয় প্রসঙ্গে নাছির বলেন, পৌরকর আদায় হয়েছে ৫৫  কোটি ৮ লাখ টাকার বেশি, ট্রেড লাইসেন্স খাতে আদায় ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বেশি, ভুমি খাতে আদায় ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বেশি। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৮ কোটি ৭০ লাখ ১৮ হাজার ৭১০ টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়।
 


বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর