২২ মার্চ, ২০১৬ ১৯:০১

ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী হত্যায় উত্তাল কুমিল্লা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী হত্যায় উত্তাল কুমিল্লা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে কুমিল্লা নগরী। হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হলে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা রেললাইন অবরোধসহ নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় মানববন্ধন করেছে কুমিল্লার বিভিন্ন সংগঠনের সংস্কৃতিকর্মীরা।

সূত্র জানায়, ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগীর লাশ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। এ সময় হত্যাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। 

মানববন্ধনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ, ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার, নোঙ্গর সাংস্কৃতিক সংঘ, রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, ক্যাম্পাস বার্তা,রেড ক্রিসেন্ট, কলেজের সাধারণ কর্মচারী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, মেধাবী ছাত্রী ও কলেজ থিয়েটারের নাট্যকর্মী সোহাগী হত্যার বিচারের দাবিতে দ্রুত খুনীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের দাবি জানান তারা। 

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুর রশীদ বলেন, সোহাগীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করাসহ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

নিহতের ভাই নাজমুল হোসেন জানান, সোহাগীকে আমাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে দাফন করা হয়েছে। তার মৃত্যুতে বাবা-মা বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, তার বোনকে শারিরীক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। তিনি এই হত্যার বিচার দাবি করেন।

উল্লেখ্য, সোমবার সকালে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সোহাগী জাহান তনু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের কর্মী ছিলেন। তার বাবা মো. ইয়ার হোসাইন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ছিলেন। সেই সুবাদে সোহাগীরা অনেক দিন ধরেই অলিপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সোহাগী ছোট।

সোহাগীর পরিবারের সূত্র জানায়, পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে সোহাগী পাড়াশোনার পাশিপাশি বাসার কাছে অলিপুর গ্রামে এক বাসায় টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছিল। সন্ধ্যায় টিউশনি করতে গিয়ে সে আর বাসায় ফিরে আসেনি। একপর্যায়ে অলিপুর কালো পানির টাংকি নামক স্থানে রাস্তায় তনুর ব্যবহৃত জুতা দেখতে পাওয়া যায়। পরে এখানে সেখানে ছেঁড়া চুল, ছেঁড়া ওড়না ও রাস্তার পাশে ঝোপের ভিতরে মাথা থেতলানো লাশ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে।

হত্যার ঘটনায় সোহাগীর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের নামে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ গত দুই দিনে কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেন, আমরা হত্যার কারণ ও অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। 

বিডি-প্রতিদিন/২২ মার্চ, ২০১৬/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর