খুলনায় দুই দিনের অতিবৃষ্টিতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ির ঘেরসহ ভেসে গেছে প্রায় ৪৭ হাজার মাছের পুকুর ও দিঘি। এতে মৎস্য চাষী ও ঘের মালিকরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
জানা গেছে, গত ২২ ও ২৩ আগষ্ট বিরামহীন ২৭ ঘন্টায় খুলনায় বিশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে খুলনা মহানগর ও নয় উপজেলার রাস্তাঘাটা, ঘরবাড়ি, মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। অতিবৃষ্টিতে কৃষিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি রূপসা, বটিয়াঘাটা, ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলার প্রায় অর্ধশত গ্রামে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা।
জেলা মৎস্য অফিসের সূত্র অনুযায়ী, খুলনায় দুই দিনের অতিবৃষ্টিতে চিংড়ি ঘেরসহ প্রায় ৩৭ হাজার পুকুর ও দিঘির মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পানিতে ভেসে গেছে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ। এর মধ্যে সাদা মাছ ৪৪২৪ মেট্রিক টন ও চিংড়ি মাছ রয়েছে ২৮৪২ মেট্রিক টন। ক্ষতি হয়েছে পুকুর, ঘেরের বেড়িবাধ ও অবকাঠামোর। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।ডুমুরিয়া ইউনিয়নের গুটুদিয়া ইউনিয়নের মৎস্য চাষী সুনীল হালদার জানান, ‘পানিতে আমাগের ঘের-বাড়ি ভেসে গেছে। চড়া সুধে দেনার টাকা কিভাবে শোধ দিবো। গলায় দড়ি দেওয়া ছাড়া আমাগের গতি নেই।’
ঘের ব্যবসায়ী হায়দার আলী খোকন জানান, অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এখনো অনেক মানুষের ঘের, কৃষি জমি পানিতে ডুবে আছে। পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় মানুষকে নৌকার চড়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামীম হায়দার জানান, দু’দিনের অতিবৃষ্টিতে প্রান্তিক মৎস্য চাষীরা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে চাষকৃত মাছ ও চিংড়ির ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপন করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাছের পোনা অবমুক্তকরণের পর সরেজমিনে ক্ষতির পরিমান খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ