২০ অক্টোবর, ২০১৬ ১৯:০১

বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াসে অতিষ্ঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াসে অতিষ্ঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী, বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস হোসেন সবুজের উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের আজীবন বহিষ্কৃত এ নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষকের ওপর হামলা, ছাত্রী লাঞ্ছনা, প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা ও নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তার কারণে ১আগস্ট ছাত্রলীগ নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতার প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইলিয়াস।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৬-'০৭ প্রথম শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে (সম্মান) ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয় ইলিয়াস। এরপর তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে খেলোয়াড় কোটায় লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি করে। ভর্তির পর সে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের রাজনীতি করতো। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইলিয়াস ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়।
 
শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০০৯ সালে মার্কেটিং বিভাগের এক শিক্ষকের বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে ইলিয়াস। ২০১০ সালের অক্টোবরে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ এনে ন-ৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান শামীমা নাসরিনের কক্ষে গিয়ে তাকে হুমকি দেয়। একই অভিযোগ এনে ২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি নিজের বিভাগের শিক্ষক মো. মশিউর রহমানকে লাঞ্ছিত এবং তার বাসার দরজা-জানালা ভাঙচুর করে ইলিয়াস। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকার একটি পিকনিক স্পট থেকে একটি বিদেশি রিভলবারসহ তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ওই দিনই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যপদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। তিন মাস পর ইলিয়াস জামিনে মুক্তি পায়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বলেন, ইলিয়াস ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে এসে বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে। ১ আগস্ট তার নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. খালিদ সাইফুল্লাহ নিহত হন। আজীবন বহিষ্কৃত ইলিয়াস শিক্ষকের ওপর হামলা, ছাত্রী লাঞ্ছনা, অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা ও নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িত। আমরা তার গ্রেফতার দাবি করছি।

খালিদ সাইফুল্লাহর নিহতের ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা ডিবি পুলিশের এসআই শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ওই দিন ছাত্রলীগ সভাপতি আলিফ ও ইলিয়াস গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে খালিদ নিহত হয়। কে দোষী তা বের করতে তদন্ত চলছে।

অভিযুক্ত ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ওই দিন সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করতে গিয়েছিলো। তার প্রতিপক্ষ আলিফ গ্রুপের বিপ্লব গুলি করে। বিপ্লবকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এতে তার গ্রুপের খালিদ নিহত হয়। র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়ার বিষয়ে ইলিয়াস বলেন, র‌্যাব তাকে ডেকে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছিল।

তার বিষয়ে কথা বলার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো.আইনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।


বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর