৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৯:২৪

জানুয়ারির মধ্যেই চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

জানুয়ারির মধ্যেই চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবি

চট্টগ্রামে জানুয়ারির মধ্যেই হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের আইনজীবী নেতারা। এর আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা চট্টগ্রাম ও সিলেটে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের যে ঘোষণা দিয়েছেন এতে আশার আলো দেখছেন আন্দোলনরত আইনজীবীদের এ সংগঠনটি। তবে এই ঘোষণাকে শুধু ‘ঘোষণাতেই’ সীমাবদ্ধ না রেখে এ দাবি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানবিচারপতির হস্থক্ষেপও চেয়েছেন আইনজীবীরা।

আজ শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের আহ্বায়ক ও সাবেক জেলা পিপি আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম। এ সময় প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদও জানান আয়োজক কমিটির নেতারা।

বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম বলেন, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে আন্তরিক। ঢাকাকেন্দ্রিক মুষ্টিমেয় কিছু আইনজীবী এতে বাধা দিচ্ছেন। উনাদের ভয় হচ্ছে, ঢাকায় হাইকোর্টের সব মামলা চট্টগ্রামে চলে আসবে। কারণ হাইকোর্টের প্রত্যেক বেঞ্চে চট্টগ্রামের মামলা আছে। এতে তাদের আর্থিক ক্ষতি হবে বলে তারা মনে করছেন। তিনি বলেন, এখন প্রধান বিচারপতি যখন ঘোষণা দিয়েছেন, আমরা জানুয়ারির মধ্যেই এই ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই। এতে চট্টগ্রামবাসীর কষ্ট, দুর্ভোগ কমে আসবে বলে তিনি জানান।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন হবে বলে প্রধান বিচারপতি আগেও বলেছিলেন। তবে টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে নাকি পারছেন না। এই টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে গত ৪৬ বছরেও চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ হয়নি। টেকনিক্যাল সমস্যাটা আসলে কি সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। এখন প্রধান বিচারপতি আবারও ঘোষণা দিয়েছেন।  এ জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। তবে আমি প্রধান বিচারপতিকে বলতে চাই, আপনি থাকতেই এই ঘোষণা বাস্তবায়ন করে যান। আগামী জানুয়ারির মধ্যেই চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন করুন।

জানা যায়, ১৯৮২ সালের ১১ মে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৬ সালের ১৭ জুন সামরিক ফরমানের ৪ (এ) ধারা সংশোধন করে স্থায়ী বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চ (অস্থায়ী) করা হয়। সংবিধান পুনরুজ্জীবনের পর সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১০০ অনুসারে সার্কিট বেঞ্চের বিধান থাকায় চট্টগ্রামসহ দেশের ছয়টি সার্কিট বেঞ্চ বহাল থেকে যায়। পরে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ২ (ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ছয়টি সার্কিট বেঞ্চই আবার স্থায়ী বেঞ্চের মর্যাদা পায়। ১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ সংক্রান্ত অষ্টম সংশোধনীর ২ (ক) অনুচ্ছেদটি বাতিলের আদেশ দিলে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটের হাইকোর্ট বেঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী, বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শংকর প্রসাদ দে, পরিষদের প্রধান সমš^কারি সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী কাশেম কামাল, সিনিয়র আইনজীবী এড. সৈয়দ মো. কামাল উদ্দিন, এএসএম বজলুর রশীদ, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, চৌধুরী আনোয়ার উল্লাহসহ মানবাদিকার কমিশনের নেতা মোহাম্মদ মাইনুদ্দিনসহ অনেকেই।


বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর