২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ২১:৫৪
ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য

শহীদ বেদিতে লোকে লোকারণ্য চট্টগ্রামে

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম



শহীদ বেদিতে লোকে লোকারণ্য চট্টগ্রামে

ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য নিয়ে চট্টগ্রামের শহীদ বেদিতে বিভিন্ন পেশার লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। ফুল হাতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেন করেন শহীদদের প্রতি। এসময় 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি', একুশ দিল মুখের বুলি, একুশ তোমায় কেমনে ভুলি', একুশ মানে মাথা নত না করা', একুশ আমার চেতনার উৎস', মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা', শহীদ স্মৃতি অমর হোক' এরূপ নানান ফেস্টুন, ব্যানার, বর্ণমালা এবং ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য নিয়ে বেদিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লক্ষাধিক মানুষ।

একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা জানানোর পর মঙ্গলবার ভোর থেকে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পেশাজীবী নেতা ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও নগর আওয়ামী লীগ নেতা এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। নগর পুলিশের একটি চৌকস দল এএসআই হুমায়ন কবিরের নেতৃত্বে সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুর জাবেদের পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পালা। মন্ত্রীর পরেই চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন কাউন্সিলরদের নিয়ে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর থেকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বিভাগীয় কমিশনার মো.রহুল আমিন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার ও চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূর ই আলম মিনা, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীসহ অন্যরা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, নগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, নগর শ্রমিক লীগ, জেলা কমান্ডার মো. সাহাবউদ্দিন ও মহানগর ইউনিটের কমান্ডার মোজাফফর আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পৃথকভাবে শহীদ মিনারে ফুল দেন। তাদের সঙ্গে ছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।

এছাড়া শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি, সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ, কাস্টমস, ফায়ার সার্ভিস, রেলওয়ে পুলিশ, আরআরএফ কমান্ড্যান্ট, শিল্প পুলিশ, আনসার ও ভিডিপির চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম রেঞ্জ পরিচালক এবং জেলা কমান্ডার, বন বিভাগ, সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড, ইউএসটিসি, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র, ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ, সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, হকার্স লীগ, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশন, নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিগত পর্যায়ে।

এদের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, সরকারি মহসীন কলেজ, সিটি সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতি, ইস্টডেল্টা ইউনিভার্সিটি, চিটাগাং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ চট্টগ্রাম, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, অনিক সাংস্কৃতিক ফোরাম, স্বপ্নীল সামাজিক সংগঠন, বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, চট্টগ্রাম লেখিকা সংঘ, এমইএস উচ্চ বিদ্যালয়, চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাব, উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি ফার্মেসী বিভাগ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, হোমিওপ্যাথিক পরিষদ, ওয়াকার্স পার্টি, সমাজ সমীক্ষা সংঘ, যন্ত্র শিল্পী সংস্থা, ক্বণন, আমরা একুশ, চবি, দৃষ্টি, অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বৌদ্ধ সমিতি, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, হাটহাজারী বিএনপি, এফএনবি, মঞ্চ সংগীত শিল্পী সংস্থা, ন্যাপ, ইসকন, অনিকেত, কণিকা, চাঁদেরহাট, মাস্টারদা সূর্যসেন স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত  পোশাক শ্রমিক ফেডারেশনসহ কয়েক’শ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলাঃ  
একুশের প্রথম প্রহরে ফুল দেয়ার সময় শহীদ মিনারে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা হয়েছে। ফুল দিতে মূল শহীদ বেদিতে মারামারি, হাতাহাতিতে জড়িয়েছে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’ নামে একটি সংগঠন। এছাড়া জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে এবং মোবাইলে সেলফি তোলার কারণে শহীদ মিনারে ভাবগম্ভীর পরিবেশের বদলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে এ সময় শহীদ মিনারে কর্মসূচির সঞ্চালক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীও অসহায় বোধ করেন। বারবার শৃঙ্খলা মেনে ফুল দেয়ার তাগাদা দিয়েও তিনি ব্যর্থ হন।

শহীদ মিনারে দায়িত্বরত নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নামে একটি সংগঠনের ছেলেদের মধ্যে ফুল দেয়া নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সামান্য বিশৃঙ্খলার পর আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।


বিডি-প্রতিদিন/২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর