নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনে যোগদানকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কায়েতপাড়া এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ চার জন গুলিবিদ্ধ ও অপর ৪০ জন আহত হয়েছে। ২৫টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ দৈনিক প্রথম ভোরের সাংবাদিক দ্বিগবিজয়ের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও রাবার গুলি বর্ষণ করে। সংঘর্ষে পুলিশ-পথচারীসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিবার দুপুরে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ইছাখালী ও বিকালে নাওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে ।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান ভুইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেজ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল বাশার টুকুর নেতৃত্বে একটি বিশাল গাড়ি বহর বের হয়। গাড়ি বহরে যোগ দিতে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া, বরুনা, নিমেরটেক, নগরপাড়া, কামশাইর, মাঝিনা, এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ইছাখালী এলাকায় পৌঁছলে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদ আলী, সফিকুর রহমান বাদল, ওমর ফারুক ভুইয়া, বিউটি আক্তার কুট্টি, রিতা আক্তার, মহিউদ্দিন, সাখাতুল্লায়াত, আবুল, রুবেল, আব্বাস, নাজমুল, আনোয়ার, রমজান, কাদেলসহ ৪০/৫০ জন মিলে হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল, পিক-আপ ভ্যান ও প্রাইভেটকারসহ ২৫ টি গাড়ি ভাংচুর করে।
অপরদিকে বিকেলে নাওড়া এলাকায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি শেষে বাড়িতে ফেরার পথে রূপগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামি মোশারফ বাহিনীর সদস্য সাখাওয়াতুল্লা, আবুল, রুবেল, আব্বাস, নাজমুল, আনার হোসেন, বাদল, মহিউদ্দিন, রাসেল ও অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জন মিলে হামলা চালায়। হামলায় গুলিবিদ্ধ ও কুপিয়ে জখম করা হয় নাওড়া এলাকার দৈনিক প্রথম ভোরের সাংবাদিক দ্বিক বিজয়কে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয় উপজেলার পূর্বগ্রাম এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে আওলাদ, নগরপাড়া এলাকার তাহের আলীর ছেলে দ্বীন ইসলাম, নাওড়া এলাকার সাইদের ছেলে রুবেল। আহতদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাসী হামলায় আরও আহত হন কায়েতপাড়া ইউপি সদস্য আবুল হোসেন, রিফাত হোসেন, নুর আলম, জামাল বাদশা, শাহাদাৎ হোসেন, রবিউল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, শাকিব মিয়া, আবিদ হোসেন, মোহাম্মদ মিয়া।
এছাড়া গুলিবিদ্ধ দৈনিক প্রথম ভোরের সাংবাদিক দ্বিগবিজয়ের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলার সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজনসহ পথচারীরাও ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের (গ অঞ্চল) সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইছাখালী ও নাওড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ