২৯ মার্চ, ২০১৭ ১৫:১০

শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অচল বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অচল বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘটের তৃতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত দুই দিনের মতো বুধবারও অফিস সময় শুরুর পরপরই আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর বিক্ষোভ সমাবেশ করে এবং দাবির স্বপক্ষে থেমে থেমে নানা শ্লোগান দেয়। 

এসময় তারা সেবা গ্রহীতা কাউকে নগর ভবনে প্রবেশ করতে দেয়নি, আবার নগর ভবনে অবস্থানরত কাউকে বের হতেও  দেয়নি। 

এদিকে টানা তিন দিন ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করায় নগর ভবনে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। নগরবাসী নানা সেবা পেতে নগর ভবনে গিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে না পেরে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।  

এদিকে বিসিসি’র শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করায় দাপ্তরিক কাজ বন্ধের পাশাপাশি গত দুই দিন ধরে নগরীর বর্জ্য অপসারন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ময়লা-আবর্জনার ভাগারে পরিনত হয়েছে বরিশাল নগরী। এই অবস্থা চলতে থাকলে বরিশাল নগরী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। 

চলমান আন্দোলন প্রশমন করতে গত মঙ্গলবার বিকেলে মেয়রের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কয়েকজন কাউন্সিলর সমঝোতার চেষ্টা করতে গেলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোন প্রতিনিধি কিংবা বিভাগীয় কমিশনার অথবা নগরীর শীর্ষ রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ছাড়া কোন সমঝোতায় না বসার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। 

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, বিসিসি’র স্থায়ী ৫৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৫ মাসের বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৩২ মাসের অর্থ বরাদ্দ এবং অস্থায়ী ১ হাজার ৬শ’ ২৬ জন কর্মচারীর ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছেন। কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।

তাই একই দাবীতে গত সোমবার থেকে আবারো অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি এবং অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন তারা। কর্তৃপক্ষ যতদিন পর্যন্ত তাদের দাবী মেনে না নেবে ততদিন এই আন্দোলন চলবে বলে তারা হুশিয়ারী দিয়েছেন। 

যদিও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয়ের পুরো টাকাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ পরিশোধ করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আন্দোলন প্রত্যাহার করে সকলকে কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবারও বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করে শ্রমিক-কর্মচারীরা। এর আগে গত ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা ৩ দিন ৩ থেকে ৫ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করে শ্রমিক-কর্মচারীরা। পরে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে চতুর্থ দিন তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করায় কর্তৃপক্ষ।

 

বিডি প্রতিদিন/২৯ মার্চ ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর