৩০ মার্চ, ২০১৭ ২১:৩০

রেল সেতুর সংস্কার কাজে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

রেল সেতুর সংস্কার কাজে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত কালুরঘাট সেতুর দায়সারা সংস্কার কাজের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে সেতুর পারাপাররত যান চলাচলসহ সাধারণ মানুষ। একই সাথে প্রতিদিন দৃশ্যমান সংস্কার কাজের কারণে সন্ধ্যার পর প্রায় সময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও হয়রানির মধ্যেও পড়ছেন বলে জানান ভুক্তভোগিরা। এছাড়া রেলওয়ে প্রশাসনের বরাবরে কালুরঘাট সেতুর ইজারাদার প্রতিষ্ঠান এক বছরের ‘সময় বর্ধিত’ চেয়ে আবেদন করে ব্যর্থ হওয়ায় গত ২০ মার্চ সোমবার উচ্চ আদালতে রীট করে। এতে রেলের এ সেতুর দরপত্র কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। তবে অনিমেষ নামের একজন ঠিকাদার সংস্কার কাজ করলেও কত টাকার কাজ হচ্ছে সেটি নিশ্চিত করে বলছেন না রেল প্রশাসন।

সেতুর নিয়মিত চলাচলকারি নাজিম উদ্দিনসহ একাধিক চলাচলরত যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কার বন্ধ থাকায়, সেতুর পাটাতন উঠে যা, এতে গাড়িসহ যাত্রীরা পারাপারে চরম হুমকি ও ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে সেতুটির কাজ শুরু হলেও দৃশ্যমান কোন ধরণের কাজ হচ্ছে না। দায়সারা গোচের কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে যেমনি রেলের টাকা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি গাড়িসহ সাধারণ মানুষের চলাচলেও অসুবিধা এবং হয়রানীর মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মো. জসিম উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কালুরঘাট সেতুর উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন  থেকে টোল আদায়ে আহ্বান করা দরপত্র প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ দেওয়ায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, সেতুটির উপর সংস্কার কাজের কাজ হচ্ছে। এগুলো দেখাশুনা করেন প্রকৌশল বিভাগ। এতে কোন প্রকার অনিয়ম বা দায়সারা গোচর হচ্ছে কিনা তাও বলতে পারবেন উক্ত বিভাগই। তবে প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইজারাদার প্রতিষ্ঠান এনএ এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর আইয়ুব আলী বলেন, কালুরঘাট সেতুর টোল আদায়ের কার্যাদেশ পাওয়ার পর থেকে সেতুটি মেরামতের জন্য রেল প্রশাসনকে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে আগের তুলনায় যানচলাচল অধেকেই নেমে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায়ীকভাবেও চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সেতুটির কার্যাদেশ পাওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস পর সংস্কার কাজ শুরু হলেও প্রতিদিন সন্ধ্যার পর যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। এর প্রেক্ষিতে ১ বছর সময় বর্ধিত করার জন্য রেল প্রশাসনে আবেদন করেও কোন প্রকার সিদ্ধান্ত না দিয়ে ২০১৭-২০১৮ বছরের পুনঃরায় দরপত্র আহবান করে প্রশাসন। এতে আদালতের আশ্রয় দিয়েছি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের জন্য কালুরঘাট সেতুর টোল আদায়ে ইজারাদার নিয়োগ দিতে গত ৮ মার্চ স্থানীয় পত্রিকায় দরপত্র আহ্বান করে রেলওয়ে। কিন্তু বর্তমান ইজারাদার ওই বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করে। আদালত প্রকাশিত দরপত্রের কার্যকারিতার উপর স্থগিতাদেশ দেন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, আদালত প্রকাশিত দরপত্রের কার্যকারীতার উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করায় দরপত্র কার্যক্রম পরিচালনা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হলো।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর