২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ২১:০১

ইজিপি 'বিহীন' রেলে ৬০ লাখ টাকার টেন্ডার!

কাজের নেপথ্যে রেল কর্তা ও চিহ্নিত ঠিকাদাররা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

ইজিপি 'বিহীন' রেলে ৬০ লাখ টাকার টেন্ডার!

অবশেষে ই-গর্ভমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) ‘বিহীন’ রেলের ৬০ লাখ টাকার টেন্ডার ড্রপিং (জমা) হয়েছে পূর্বাঞ্চলের কর্মাশিয়াল ম্যানেজারের (সিসিএম) কার্যালয়ে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৪টি কাজের ৬০ লাখ টাকার টেন্ডার ‘সমঝোতার নেপথ্যে’ কাজ করেছেন রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। রেলের প্রতিটি টেন্ডার ইজিপির মাধ্যমে করার জন্য রেলওয়ে মহাপরিচালক (ডিজি)’র নির্দেশ দিলেও সিসিএম দপ্তর তা উপেক্ষা এ টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার টেন্ডার জমা দেয়ার শেষ দিনে প্রতিটি কাজে বিপরিতে কৌশলে ৩টি করে টেন্ডার ফরম জমা দেন ঠিকাদার চক্রটি। এসব কাজে অংশগ্রহণ করে চিহ্নিত ঠিকাদাররা। যারা প্রতিনিয়ত রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে আসছেন। তবে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সহযোগিতায় এক শ্রেণির চিহ্নিত ঠিকাদার এসব কাজের টেন্ডার জমা দিলেও বদলি আতঙ্কে রেল কর্তারা কোন ধরণের মুখ খুলছেন না এবং অনেকেই ঊধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারা সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরদাতা জানা যায়নি। 

অভিযোগে জানা যায়, উক্ত কাজগুলো ছাড়াও প্রতিটি কাজের নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়া সত্বেও এবার বড় অংকের টাকার লোভে কৌশলে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার জন্য নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছেন চীফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) দপ্তরের চিহ্নিতরা। যা ইতিমধ্যে নানা অভিযোগ গণমাধ্যমসহ গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও অভিযোগ রয়েছে। 

পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই বলেন, গত ১ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে রেলের প্রতিটি কাজ ইজিপির মাধ্যমে করার জন্য মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। এরপর থেকে প্রতিটি দপ্তর ইজিপির মাধ্যমে কাজ করছেন। সিসিএম দপ্তরের এটি কেন করা হয়নি, তা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে জানতে সিসিএম দপ্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।  

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, নিয়মতান্ত্রিকভাবে গত ১৪ এপ্রিল বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় পৃথক ৪টি কাজের দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন পূর্বাঞ্চলের চীফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) সরদার শাহাদাত আলী। পৃথকভাবে এ ৪টি কাজের মধ্যে রয়েছে একটি গ্রুপে রয়েছে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য টাকা গণনা ও জাল টাকা সনাক্ত মেশিন সরবরাহ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য টাকা গণনা ও জাল টাকা সনাক্ত মেশিন সরবরাহের দুটি কাজ। এ দুটি কাজের প্রতিটিতে ১৫ লাখ টাকা করে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কাজ। অপর দুটিতে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য তিন আসন বিশিষ্ট ওয়েটিং চেয়ার সরবরাহ ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য তিন আসন বিশিষ্ট ওয়েটিং চেয়ার সরবরাহ কাজ। এ দু'টি কাজের প্রতিটির জন্য ১৫ লাখ টাকা করে ৩০ লাখ টাকার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রায় ৬০ লাখ টাকার উক্ত চারটি কাজের বিষয়ে সম্প্রতি নানাবিধ অভিযোগে স্থগিত হলেও আবারও মঙ্গলবার টেন্ডার হয়েছে। এতে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, পিপিআর-৮ এর আইন ভঙ্গ হয়েছে এবং অফিস আদেশও অমান্য করে এই টেন্ডারটি করা হয়েছে। আগামিতে আরো ৬টি কাজের টেন্ডার নানাবিধ কৌশলে করার জন্য পাঁয়তারা চালাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

বিডি-প্রতিদিন/২৫ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর