জলাবদ্ধ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুত পানি নিষ্কাশন করে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা থেকে ডিএনডিবাসীকে মুক্তির দাবিতে মানবববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন অব সিদ্ধিরগঞ্জে বসবাসরত ঢাবি শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে যোগ দেয় ভুক্তভোগী অনেক ডিএনডিবাসীও।
আজ বেলা ১১ টায় শিমরাইল ডিএনডি পাম্প হাউজের সামনে ৬০-৭০ জন ছাত্র এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এসময় পাম্প হাউজে প্রবেশকালে ছাত্রদের তোপের মুখে পড়েন পাম্প হাউজের দায়িত্বরত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল জাব্বার। শিক্ষার্থীরা তার কাছে জানতে চান, নিষ্কাশনের জন্য ছোট ২২টি পাম্পের মধ্যে ৪/৫ টি ছাড়া বাকিগুলো কেন চালানো হয় না? বড় ৪টি পাম্প কেন সব সময় চালু রাখা হচ্ছে না?
এসব প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী তাদেরকে পাম্প বিকলসহ নিষ্কাশনের নানা সীমাবদ্ধতার কথা জানান। ছাত্ররা এসময় পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ডিএনডির কয়েক লাখ মানুষকে পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। অন্যথায় ৭ দিন পর ডিএনডিতে বসবাসরত বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বড় আন্দোলনে যাবেন তারা।মানববন্ধনের পর বেলা সোয়া ১০টায় শিমরাইল পাম্প হাউজে গিয়ে দেখা গেছে, ডিএনডিতে পানির উচ্চতা ৩ দশমিক ৭৫ মিটার। এটা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ দশমিক ২৫ মিটার বেশী। ৪৮ ঘণ্টা আগেও পানির স্তর একই ছিল। অপরদিকে শীতলক্ষ্যায় পানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৭৫ মিটারে যা ৪৮ ঘণ্টা আগে ছিল ৩৫ সেন্টিমিটার কম। ১২৮ কিউসেক সেচ ক্ষমতা সম্পন্ন ৪টি পাম্পের মধ্যে একটি পাম্প ৩১ জুলাই রাত থেকে বিকল হয়ে আছে। এই পাম্পটি ২০ দিন বিকল থাকার পর গত ২৬ জুলাই চালু করা হয়েছিল। এছাড়া ৫ কিউসেক সেচ ক্ষমতা সম্পন্ন ২২ টি পাম্পের মধ্যে মাত্র ৩ টি পাম্প চালু রয়েছে। বাকী পাম্পগুলো বিকল হয়ে রয়েছে।
পাম্প হাউজে দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাম প্রসাদ বাছার জানায়, ১২৮ কিউসেক সেচ ক্ষমতা সম্পন্ন যে পাম্পটি বিকল হয়েছে সেটি মেরামত করা খুব জটিল কাজ। কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতের কোন সর্টসার্কিট হয়ে গেলে সব পাম্প বন্ধ হয়ে পাম্প হাইজসহ পুরো ডিএনডি পানির নিচে ডুবে যাবে। একারণে সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। ৫ আগষ্ট থেকে ওই কাজ শুরু করা হলেও ১৯ আগষ্ট পর্যন্ত ওই বড় পাম্পটি মেরামত করতে পারেনি পাম্প হাউজ কর্তৃপক্ষ। পাম্প হাউজের একটি সূত্র জানায়, ডিএনডি পাম্প হাউজের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার শুষ্ক মৌসুমে পাম্পগুলো মেরামত না করে নিজের আত্মীয় ঠিকাদারদের মাধ্যমে পাম্প হাউজের অন্যান্য সংস্কার করেছিল। এ ছাড়া তার এক ছেলে ও আত্মীয়দের এ পাম্প হাউজে চাকরি দিয়ে নিজের খেয়াল খুশিমত কাজ করেছিল। এতে করে পাম্প হাউজের ভাল সংস্কার না করায় পাম্পগুলো দিয়ে ভালভাবে পানি নিষ্কাশন করতে পারছে না বলে মনে করছেন বর্তমান পাম্প হাউজের কর্মকর্তারা।
বিডি প্রতিদিন/১৯ আগস্ট ২০১৭/হিমেল