২২ আগস্ট, ২০১৭ ২১:৪৮

চট্টগ্রামে রেলের টিকিট পেতে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম


চট্টগ্রামে রেলের টিকিট পেতে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির শেষ দিনে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। বাড়ি ফিরতে যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত টিকেট সংগ্রহ করতে দীর্ঘ লাইনে সেই সকাল থেকেই দাঁড়িয়ে 'সোনার হরিণের' মতো টিকেটটা পেয়ে মহা আনন্দ এবং স্বস্তির নিশ্বাসও ফেলতে দেখা গেছে অধিকাংশ যাত্রীদের মধ্যে। আবার দেখা গেছে টিকেট না পাওয়া যাত্রীর হতাশা আর নানাবিধ অভিযোগও। মঙ্গলবার বিক্রয় করা হয় ৩১ আগস্টের টিকেট। সব মিলিয়ে রেল প্রশাসনও যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি অনিয়ম এবং টিকেট কালোবাজারি বন্ধে সিসিটিভিসহ ব্যাপক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানান পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম। 

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে সিসিটিভির পাশাপাশি জিআরপি, আরএনবি ও রেল প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছেন। ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আগামী ২৮ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সবধরণের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জিআরপির ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে পুলিশের স্পেশাল টিম বসানো হয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার টিমও। যাত্রীরা শৃঙ্খলা মেনেই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করছেন।

পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্য কর্মকর্তা (সিসিএম) সরদার শাহাদাত আলী বলেন, কোরবানের ঈদের টিকেটের শেষ দিনে চাহিদা অতিরিক্ত  বেড়েছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় ৩১ আগস্ট সবাই বাড়িতে যাবেন। তাই এ দিনের টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। শেষ সময়ে যাত্রীরা কর্মস্থল ছেড়ে বাড়ি ফিরে। চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যেমন ভিড়, তেমনি ঢাকাসহ অন্য স্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় বেশী। চট্টগ্রামে অল্প সময়ের মধ্যে বিজয় এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা ও তূর্ণা নিশিতার সব টিকেট শেষ হয়ে যায়। 

যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে রেলপথমন্ত্রী ও ডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

একই কথা বললেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মো. মিজানুর রহমানও। তিনি বলেন, টিকেট থাকা সাপেক্ষে যাত্রীরা সময়ের মধ্যে টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। 

বিজয় ট্রেনের যাত্রী রবিউল হোসেন বলেন, সকাল থেকেই লাইনে দাড়ঁড়িয়ে ছিলাম দুটি টিকেটের জন্য। কাউন্টারের টিভির পর্দায় দেখা যাচ্ছে এখনও টিকেট আছে। সামনে কয়েকজন যাত্রী টিকেটের অপেক্ষায় আছেন। তবে কাউন্টারে গিয়ে তিনটা টিকেট সংগ্রহ করেছি। অন্যদিকে নুর উদ্দিন নামের আরেকজন মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী বলেন, সকাল ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টারে গিয়ে দেখলাম টিকেট শেষ হয়েছে গেছে। এখন (বেলা ১টা) পর্যন্ত ঘুরছি কিভাবে টিকেট পাবো। জানি না শেষ পর্যন্ত বাড়ি যেতে পারবো কিনা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট ২৭, ১৯ আগস্ট ২৮ এবং ২০ আগস্ট ২৯ আগস্টের টিকেট দেওয়া হয়েছে। ২২ তারিখ দেওয়া হবে ৩১ আগস্টের টিকেট। ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২৫ আগস্ট থেকে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল ৭টায়, মহানগর গোধূলী বিকেল ৩টায়, চট্টলা এক্সপ্রেস সকাল সোয়া ৮টায়, মহানগর এক্সপ্রেস বেলা সাড়ে ১২টায়, সোনার বাংলা বিকেল ৫টায় এবং তূর্ণা এক্সপ্রেস রাত ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে। 

এছাড়া পাহাড়িকা সকাল সোয়া ৯টায়, উদয়ন এক্সপ্রেস রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশ্যে, মেঘনা এক্সপ্রেস বিকেল সোয়া ৫টায় চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে এবং বিজয় এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সকাল ১০টায় ও ঢাকা মেইল এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে, সাগরিকা এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৭টায় চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে ৩টায় বাহাদুরাবাদ’র উদ্দেশ্যে ও জালালাবাদ এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ৯টায় সিলেটের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে।

বিডি-প্রতিদিন/২২ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর