২১ অক্টোবর, ২০১৭ ১৪:৫৫

বরিশালে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে গেছে বিস্তির্ন নিম্নাঞ্চল-মাছের ঘের

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে গেছে বিস্তির্ন নিম্নাঞ্চল-মাছের ঘের

গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা তিনদিনের বৃস্টিতে নাকাল বরিশালসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষ। ভারী বৃষ্টির কারণে তলিয়ে গেছে বিস্তির্ন নিম্নাঞ্চলসহ ফসলী জমি-মাছের ঘের। নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। এতে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। নগরীর খালগুলো দখল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী নগরবাসীর। এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশাল-ভোলা এবং বরিশাল-ইলিশা মজুচৌধুরীর হাট রুটের লঞ্চ চলাচলে জারী করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। অভ্যন্তরীন নদী বন্দরের জন্য ২ নম্বর এবং সমূদ্র বন্দরের জন্য ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে। 

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার প্রনব কুমার রায় জানান, গতকাল শনিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৩.১  মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছর একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এর আগে গত ২১ জুলাই বরিশালে একদিনে সর্বোচ্চ ১১৪.০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিলো। বিগত ৪৮ ঘণ্টায় রেকর্ড করা হয় ২৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। 

ভারী বৃষ্টির কারনে নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। নগরীর নবগ্রাম রোড, কালীবাড়ি রোড, বগুড়া রোড, মল্লিক রোডসহ বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতাসহ আশপাশের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি এবং দোকানেও ঢুকে গেছে পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। 

অতিপ্রয়োজন ছাড়া বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। আবার যারা বাসা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছেন তারাও পড়েন যানবাহন সংকটে। বাসিন্দাদের বিভিন্ন সড়ক মোড়ে দীর্ঘক্ষণ যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় করতে দেখা গেছে। যানবাহন পেলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন নগরবাসী। 

নগরবাসীর অভিযোগ, কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নীচে থাকার পরও নগরীর প্রবাহমান খালগুলো দখল-ভরাট এবং ড্রেনগুলো ঠিকভাবে পরিস্কার না করায় জলাবদ্ধতায় পড়ছেন তারা। 

খালগুলোর যত্ন নেওয়া হয়নি স্বীকার করে বরিশাল সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেছেন, নগরীর ২৪টি খাল পুনঃখননের জন্য মন্ত্রণালয়ে ২৩০ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেয়া আছে। এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে খালগুলো পুনঃখনন করা হবে, তাহলে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। 

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশাল-ভোলা এবং বরিশাল-ইলিশা মজুচৌধুরীর হাট রুটের লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অভ্যন্তরীন নদী বন্দরের জন্য ২ নম্বর এবং সমুদ্র বন্দরের জন্য ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে।

অব্যাহত ভারী বৃষ্টির কারণে বিস্তির্ন ফসলী জমি তলিয়ে যাওয়ায় আমন ধান এবং শাক-সবজীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন হিজলার বাসিন্দা নুরুল আলম রাজু। এছাড়া বহু পুকুর এবং ঘেরের মাছ ভেসে গেছে বলে তিনি জানান। 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন, গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে মাঝারী ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টির মধ্য দিয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। রবিবার নাগাদ বরিশালের আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তারা। 


বিডি প্রতিদিন/২১ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর