২১ নভেম্বর, ২০১৭ ১৯:০৮

রেল কর্মচারিদের যাতায়াত ভাতা বিতরণে অনিয়ম, হাতাহাতি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

রেল কর্মচারিদের যাতায়াত ভাতা বিতরণে অনিয়ম, হাতাহাতি

রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের ট্রেন লাইনটিং ও এসি অপারেটর কর্মচারিদের টিএ বিল (যাতায়াত ভাতা) বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ বিভাগের একটি চক্র তৈরি করা বিলের ডুপ্লিকেট কপির মাধ্যমে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকার কমিশন (পার্সেন্টস) হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েকজন কর্মচারি। এ টাকার একটি অংশ (উপটোকন) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাঝেও চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার জের ধরেই কর্মচারিদের একটি অংশ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের অফিসে বিল নিতে আসলে উত্তেজনা ও হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। এর আগের দিন সোমবার একই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।

একাধিক কর্মচারি অভিযোগ করে বলেন, এমন ঘটনায় রেলের চিহ্নিত কিছু কর্মচারি-কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। রেলের হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দোষীদের শাস্তি নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

রেলওয়ে থানার এসআই সমর বড়ুয়া বলেন, আমার থানার পাশে (ট্রেন লাইটিং অফিস) একটি অফিসে অনেক কর্মচারি জড়ো হয়েছে। এখানে কিছু হট্টগোলও হয়েছে। কি কারণে হয়েছে জানি না।

কর্মচারি মনছুর মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিল প্রদানের জন্য কিছু পার্সেন্টেস (কম/বেশী) নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আলোচনার মাধ্যমে সেটা সমাধান হয়েছে। তবে বড় কোন ঘটনা ঘটেনি। 

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিদ্যুৎ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের ট্রেন লাইনটিং ও এসি অপারেটর কর্মচারিদের টিএ বিল (যাতায়াত ভাতা) বিতরণে অনিয়মের ঘটনায় কর্মচারিদের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ বিভাগের চিহ্নিত একটি চক্র তৈরি করা বিলের ডুপ্লিকেট কপির মাধ্যমে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকার কমিশন (পার্সেন্টস) হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিল পাস করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে কিছু পার্সেন্ট টাকা দিলে দ্রুত বিল তৈরি হয়। এ কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেন লাইটিং কর্মচারি হেফজুর রহমান। তিনি মূল বিলটি তৈরি করলেও কর্মচারি মনছুর মিয়া ও মিলনের পৃথক নেপথ্যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিল তৈরি করে বিল প্রদানের সময় নানাবিধ অনিয়ম ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল নির্ধারণ করেন এসব কর্মচারিরা। এতে মূল টাকা ২০ শতাংশ বিল কেটে রেখে কর্মচারিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এতে প্রতি মাসের বিল নিতে আসা  কর্মচারিরা মঙ্গলবার উত্তেজিত হলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল সোমবারও এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা শাহ আলমের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এখানে বিতরণ করা বিলের কিছু অংশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছেও টাকা ভাগ যায় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারি জানান। তারা বলেন, প্রতিনিয়ত নানা হয়রানির স্বীকার হচ্ছি। বিভিন্ন লাইন ডিউটি করে টাকা না দিলে ডিউটি থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। আবার অনেকেই ডিউটি না করেও পার্সেন্ট (টাকা) দেয়ার কারণে মাসিক বিলগুলো নিয়মিত পেয়ে যাচ্ছে। প্রতি মাসে টাকা নিচ্ছে এমন কয়েকজনের মধ্যে এসি অপারেটর শাহাবুদ্দিন, এসি অপারেটর আবুল হাশেম, এসি অপারেটর, গোলাম মাওলা, এসি অপারেটর, ইলেকট্রিক ফিটার হানিফসহ অনেকেই। তাছাড়া আরএনবিসহ রেলের কর্মচারিদের সহযোগিতায় সরকারি মালামাল পাচার করে হাজার হাজার টাকা উপটোকন ও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে রেল। তবে রেলের বিদ্যুৎ বিভাগে টেন্ডার জালিয়াতিসহ নানাবিধ অনিয়ম দুদক ও রেল প্রশাসন তদন্ত করছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

বিডি-প্রতিদিন/২১ নভেম্বর, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর