২১ নভেম্বর, ২০১৭ ১৯:১৪

টঙ্গীতে ৪ দিনে ৫ অস্বাভাবিক মৃত্যু

টঙ্গী প্রতিনিধি:

টঙ্গীতে ৪ দিনে ৫ অস্বাভাবিক মৃত্যু

প্রতীকী ছবি

টঙ্গীতে গত চারদিনে পৃথক স্থানে পাঁচটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনা মৃতের স্বজনরা হত্যা বলে দাবি করেন।  টঙ্গীর সাতাইশ এলাকার গত শুক্রবার রাতে শরিফ মার্কেট থেকে আলমগীর হোসেন (১০) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও শনিবার সকালে গোপালপুর এলাকা থেকে রিয়া আক্তার (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গত রবিবার পৃথক দু’টি ঘটনায় রুবেল (৩১) ও গৃহবধূ সুফিয়া (১৯) ও গত সোমবার সকালে টঙ্গীর দত্তপাড়া জহির মার্কেট এলাকায় ঝর্না (২২) নামে এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত আলমগীরের বড় বোন জানায়, আমার ছোট ভাই দুই দিন যাবত মাদ্রাসায় যাচ্ছে না। এঘটনায় তাকে শাসন করার পর গত শুক্রবার রাতে জসিম উদ্দিনের ভাড়া বাসার একটি ঘরে ওয়াড্রবের উপরে উঠে ফ্যানের সাথে রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে সে আত্মহত্যা করে। নিহত আলমগীর হোসেন নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানা কুলাউরা গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে। সে সাতাইশ এলাকার সামিয়া হামিদিয়া কারীম মাদ্রাসার হেফয্ বিভাগের ছাত্র ছিলো। 

অপরদিকে শনিবার সকাল ১০ টায় গোপালপুর এলাকার নান্নু মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া আরব আলী মুন্সির মেয়ে রিয়া আক্তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে রহস্যজনক আত্মহত্যা করে। এঘটনায় নিহত রিয়ার বড় বোন আখি তাঁর পিতা আরব আলী মুন্সির বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে গত সোমবার সন্ধ্যায় ৩০৬ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা নং ৫০। পুলিশ অভিযুক্ত পিতা আরব আলী মুন্সিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।  রিয়া শরিয়তপুরের ভাঙ্গা থানা এলাকার ঢোলকান্দি গ্রামের একটি স্কুলের ছাত্রী ছিলো বলে জানা গেছে। 

টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর হাজীর বাড়ির ভাড়াটিয়া রুবেল তার ঘরের দরজা আটকিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এসময় তার আত্মীয়স্বজনরা ডাকাডাকি করলে তার কোন সাড়া না পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। টঙ্গী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙ্গে রুবেলের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত রুবেল একজন পিকআপ ভ্যান চালক ছিলেন। রুবেলের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার শিমুলিয়া গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে। 
 এর আগে রবিবার রাত ১টায় একই এলাকায় থেকে সুফিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে টঙ্গী  পুলিশ। সুফিয়ার শ্বাশুড়ি মমতাজ বেগম জানান, রাত ৮টায় টিভি দেখার সময় আমি একটি থাপ্পর দেই সুফিয়াকে। সেই অভিমানে সুফিয়া রাতে দরজা বন্ধ করে তার পড়নের উড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। নিহত সুফিয়া লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানার চরগজারিয়া এলাকার মো. সোহেলের স্ত্রী।

গত সোমবার সকালে টঙ্গী দত্তপাড়া জহির মার্কেট এলাকায় ঝর্না নামে এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পিতা লিয়াকত জানান, গত কয়েক মাস ধরে স্বামী খোকন যৌতুক হিসেবে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে আসছিলো। টাকা দিতে না পারায় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে ঝর্নাকে পিটিয়ে আহত করে। এরই জের হিসেবে ঘটনার দিন রাতে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এবিষয়ে আটককৃত খোকন মিয়ার সাথে কথা বললে ঝর্নাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, ঝর্না আত্মহত্যা করেছে। নিহত ঝর্না জামালপুর জেলার বকসীগঞ্জ থানার গুড়িয়ার চরের বাসিন্দা। 

এসব অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে টঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ তালুকদার বলেন প্রতিটি ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। 

 


বিডি প্রতিদিন/২১ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর