১৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ২২:০৬
ক্রিকেট খেলায় সিনিয়র-জুনিয়র তর্ক

চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র খুন

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম মহানগরের জামাল খান মোড়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সরকারি কলেজিয়েট হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান ইসফাত (১৫) খুন হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জামালখান আইডিয়াল স্কুলের পাশে আজমিরী ওর্য়াকশপের সামনে এ ঘটনা। 

কলেজিয়েট স্কুলে ক্রিকেট খেলায় সিনিয়র জুনিয়র বিতর্কে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। নিহত আদনান প্রকৌশলী আদনান আখতারুল আলম এলজিইডি খাগড়াছড়ির নির্বাহী প্রকৌশলীর পুত্র এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরীর নাতি। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে আদনান ছিল ছোট।  

তবে এ ঘটনায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তিনজনকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজ রাত সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা যায়। 

ঘটনাটি চকবাজার থানায় অধীনে আইডিয়াল স্কুল এলাকায় ঘটলেও ছাত্রটি ছুরিকাঘাতের পর আহত হয়ে দৌঁড়ে খাস্তগীর স্কুলের সামনে এসে পড়ে যায়। এটি কোতায়ালি থানা এলাকায় হওয়ায় মামলাটি এখানেই হবে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ আগে কলেজিয়েট স্কুলে ক্রিকেট খেলায় সিনিয়র জুনিয়র বিতর্কে মাথা ফাটাফাটিও হয়। ওই সময় আদনানকে সিনিয়র এক ভাই মারধরও করে। এ ঘটনার জের ধরে আজ দুপুর ২টার দিকে আদনান আইডিয়্যাল স্কুলের সামনে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে অপেক্ষা করে।  এর পর ওই স্কুলের ছুটি হলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আদনানকে পাশ্ববর্তী শাহ ওয়ালি উল্লাহ্ ইনস্টিটিউটের ছাত্র সাকিব ও নাজিম এবং আডিয়্যাল স্কুলের শিক্ষক ইমরান হোসেন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তারা বলেন, ‘আইডিয়্যাল স্কুলের দিক থেকে আদনানকে কয়েকজন যুবক দৌঁড়ায়। পরে আমরা তাকে ছুরিকাঘাত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’    

নিহত আদনানের নানা আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আদনানের পিতা অত্যন্ত সৎ মানুষ। সে আদর্শ একটি পরিবারের সন্তান। তাদের সঙ্গে কারো বিরোধ নেই। কিন্তু কেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়ে আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’     

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, গতকাল দুপুরে জামলখান আইডিয়াল স্কুলের সামনে ইসফাতকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় দৌঁড়ে জামালখান মোড়ের দিকে এসে রাস্তায় পড়ে গেলে আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষক দুই ছাত্র তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দুপুরে দিকে নিজেদের মধ্যে পূর্ব কোনো ঝামেলাকে কেন্দ্র করে স্কুল ছাত্রদের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে আদনানকে ছুরি মারে তার বন্ধুরা। প্রাথমিকভাবে হাজেরা তজু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এক ছাত্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো পরিস্কার করে কিছু বলা যাচ্ছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে একটি টিম কাজ করছে। তাছাড়া এ ব্যাপারে এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি।’

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এতে দেখা যায়, ছেলেটি আহতবস্থায় দৌড়ে জামালখান খাস্তগীর স্কুলের সামনে পড়ে যায়। এ সময় তার পিছনে আরো কয়েকজন ছাত্রকে দৌড়ে আসতে দেখা গেছে।  

কলেজিয়েট স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র হিসাবে আদনান খুব ভাল ও মেধাবী। জেএসসিতে সে এ প্লাস অর্জন করেছে। কিন্তু কেন কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা বুঝতে পারছি না।’

 

বিডি প্রতিদিন/১৬ জানুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর