শিরোনাম
২০ মার্চ, ২০১৮ ২২:১৪

সাভারে পৃথক ঘটনায় দুই লাশ উদ্ধার

সাভার প্রতিনিধি:

সাভারে পৃথক ঘটনায় দুই লাশ উদ্ধার

সাভারে নিখোঁজের ১৫ দিন পর মোঃ ফয়সাল (২০) নামের এক কলেজছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে সাভারের জয়ানাবাড়ী এলাকার বৈদ্যনাথের ইটভাটার পাশ থেকে বালুচাপা অবস্থায় ফয়সালের অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়। এদিকে সাভারের ছায়াবিথী এলাকা থেকে সোহাগ নামে দুই বছর বয়সী এক শিশুর রহস্যজনক মরদেহ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে ছায়াবিথী মহল্লার শিশুটির নানা বাবুল মাইজ ভান্ডারীর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

ব্যবসায়ীক দ্বন্দের জের ধরে কৌশলে অপহরণ করে মুক্তিপন না পেয়ে ফয়সালকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। এঘটনায় এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাবাদের জন্য চার জনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। 

ফয়সাল সাভারের হেমায়েতপুর জয়নাবাড়ি এলাকার মাসুদ রানা ফকির চাঁনের ছেলে। সে সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনী মহল্লায় অবস্থিত ল্যাবরেটরী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। এছাড়া সে তার বাবার মোটর পার্টস এর দোকানে বসতো।  

নিহতের পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ীক দ্বন্দের জের ধরে ফয়সালকে কৌশলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী আকাশ ও রাজু। পরে তাকে আটকে রেখে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয় ফয়সালের বাবা ফকির চাঁনের কাছে। এঘটনায় গত ৬ মার্চ ফকির চাঁন বিষয়টি জানিয়ে সাভার মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (৩০৮) দায়ের করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজগর হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ফয়সাল নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের হওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করি। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্ত রাজু ও আকাশের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই। পরে মঙ্গলবার ভোরে দিনাজপুরের বিরামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আকাশ ও রাজুকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্য মতে সাভারের জোরপুল এলাকার বৈদ্যনাথের ইটভাটার পাশে হোসেন আলীর বালুর টেক থেকে বালুচাপা অবস্থায় নিহত ফয়সালের অর্ধগলিত মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাসিনুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের করে হত্যার সাথে জড়িত বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

এদিকে সাভারের ছায়াবিথী এলাকা থেকে সোহাগ নামে দুই বছর বয়সী এক শিশুর রহস্যজনক মরদেহ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে ছায়াবিথী মহল্লার শিশুটির নানা বাবুল মাইজ ভান্ডারীর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

নিহত শিশুর চাচা আব্দুল বাতেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত প্রায় দুই মাস পূর্বে তার ছোট ভাই আব্দুল মমিন ও তার স্ত্রী বাবলী বেগমের মধ্যে সাংসারিক কলহ হয়। এক পর্যায়ে বাবলী তার শিশু ছেলে সোগাককে নিয়ে অভিমান করে বাবা বাবুল মাইজ ভান্ডারীর ছায়াবিথী এলাকার বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকেই তার ছোট ভাই মমিন ও বাবলী দম্পতি আলাদাই বসবাস করে আসছিল। এর মধ্যে অনেকবার তারা পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করলেও বাবলীর বাবা বাবুল মাইজ ভান্ডারীর কারণে তা সম্ভব হয়নি। উল্টো সে তার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এঘটনার পর হঠাৎ আজ দুপুরে মমিনের শ্বশুড় বাড়ি থেকে ফোন করে সোহাগের মৃত্যুর খবর তাদের জানায়।

তিনি আরো বলেন, কয়েক দিন আগেও তারা মমিনের শ্বশুড় বাড়িতে গিয়ে সোহাগকে সুস্থ অবস্থায় খেলতে দেখেছেন। আর আজ বলছে যে অসুস্থ হয়েই সোহাগের মৃত্যু হয়েছে। মূলত মেয়ে বাবলীকে অন্যত্র বিয়ে দিতেই পথের কাঁটা হিসেবে শিশু সোহাগকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে তারা নানা বাবুল মাইজ ভান্ডারী। 

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা আমজাদুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিকালে সোহাগ নামের ঐ শিশুটিকে হাসপাতালে আনার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়েছিল। 

এব্যাপারে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক এনামুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নিহত শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় নিহত শিশুর বাবা আব্দুল  মমিন ও নানা বাবুল মাইজ ভান্ডারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  


বিডি প্রতিদিন/২০ মার্চ ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর