২২ এপ্রিল, ২০১৮ ১৫:৫২

২৫ মাসেও অধরা তনুর খুনিরা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

২৫ মাসেও অধরা তনুর খুনিরা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ২৫ মাস পেরিয়ে গেলেও খুনিরা শনাক্ত হয়নি, নেই মামলার উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি। খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার এবং কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা। তনুর পরিবার সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন। 

তনুর পরিবারের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি তনু। পরে তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবি’র পর ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রানু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। 

সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

এদিকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরানো বিষয়গুলো জিজ্ঞেস করেন ঢাকা সিআইডির কর্মকর্তারা। 

সুজন কুমিল্লার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মায়মুনা আক্তার রুবী বলেন, তনুর মতো একটি প্রাণোচ্ছ্বল মেয়েকে হত্যা করা হলো। তারপর ২৫ মাসেও কোন আসামি শনাক্ত করা হয়নি। আমরা কোন সমাজে বসবাস করছি?

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান জানান, একটি সুরক্ষিত স্থানে তনু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২৫ মাসেও অপরাধীদের শনাক্তে সিআইডির ব্যর্থতায় প্রমাণ করে সাধারণ মানুষ কত অসহায়। 

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, মেয়ের শোকে তনুর বাবা অসুস্থ ও হাঁটতে পারছেন না। তিনি বর্তমানে তিন মাসের ছুটিতে আছেন। তিনি বলেন, মেয়ে থাকলে আমাদের দেখাশুনা করতে পারতো, এখন কে দেখবে আমাদের? এদিকে দেখতেছে দেখতেছে বলে সিআইডি ২৫ মাস পার করেছে। তিনি মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আবেদন জানাতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চান বলেও জানান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলার স্বার্থে পুনরায় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দুই তিন মাসের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলেও তিনি জানান। 

বিডি-প্রতিদিন/২২ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর