২৭ মে, ২০১৮ ১৮:৩৩

ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় বিএমপির বিশেষ ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় বিএমপির বিশেষ ব্যবস্থা

ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বরিশাল নগরীতে থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়। এ লক্ষ্যে ২০ রমজানের পর নগরীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদ পরবর্তী ৭দিন পর্যন্ত এই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই,চাঁদাবাজী, পকেটমার, অজ্ঞান পার্টি সহ সব ধরণের অপরাধীর কবল থেকে ঘরমুখো মানুষকে নিরাপত্তা দিতে রবিবার বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,
গোয়েন্দা সংস্থাা, সড়ক ও নৌ-পরিবহন সংগঠন এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
সভায় তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে নগরবাসী তথা ঘরমুখো মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএমপি বদ্ধপরিকর।
সভায় ভারপ্রাপ্ত কমিশনার ঈদের প্রাক্কালে লঞ্চের কেবিনের দালালদের ধরতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরে থাকা ২০ কিলোমিটার মহাসড়কে পোশাকধারী ও সাদাপোশাকে পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। নগরীর রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে চলাচলকারী বাসগুলোতে ছাদে এবং অতিরিক্ত যাত্রীবহন না করার পাশাপাশি প্রকৃত চালকরা যেন যানবাহন চালান সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক এবং ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চ মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় বিএমপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০ রমজান থেকে যানজট নিয়ন্ত্রণে নগরীর ২০টি পয়েন্টে বাড়তি ট্রাফিকিং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) উত্তর কুমার পাল বলেন, ফুটপাত দখল করে কোন দোকানপাট কিংবা ভাসমান ব্যবসা পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। ২/১ দিনের মধ্যেই নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। সভায় জানানো হয়, মোবাইল টিম, চেকপোস্ট, ফুটপেট্রোল, নারী পুলিশ পেট্রোল, ভ্রাম্যমাণ আদালত টিম সহ নগরীর ১৪টি পয়েন্টে নিয়োজিত থাকবে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ নগর পুলিশের সহস্রাধিক সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিশেষ নিরাপত্তা দল।
নগরীর দুটি বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে যাতে যাত্রীরা, ছিনতাইকারী, মলমপার্টির শিকার না হন সেজন্য সাদা পোশাকে এবং পোশাকধারী একাধিক টিম দিন-রাত মোতায়েন থাকবে ঈদের

পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত। ঈদের পর বিনোদন কেন্দ্রগুলেতেও পুলিশের ৬টি বিশেষ টিম নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জামাত সমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে ৫টি বিশেষ টিম। সভায় ব্যাংক, বীমা, শপিংমল, জুয়েলারী ও আবাসিক হোটেলগুলোতে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সভায় দুটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, নগরীর দুটি বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ঈদের আগেও পরেও যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় হয়। তাদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃগ্ধখলা বাহিনীর পাশাপাশি টার্মিনাল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোরও বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ওই দুই সংস্থার পক্ষ থেকে লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে বিভিন্ন রুটের ভাড়া ব্যানারে প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়।

সভায় বরিশাল বাস-মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির বাধার কারণে পশ্চিমাংশের ৭ রুটের বাস নগরীর রূপাতলী টার্মিনালে আসতে পারে না। রূপাতলী থেকে ঝালকাঠির রায়াপুর পর্যন্ত পশ্চিমাংশের যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বিএমপি কমিশনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন বলেন, লঞ্চ, বাস টার্মিনাল এবং শপিংমলগুলোতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের সর্বোচ্চ প্রস্ততি রয়েছে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিজিএফআই’র অধিনায়ক কর্নেল জিএম শরিফুল ইসলাম, উপ- কমিশনার (সদর) মো. কামরুল আমীন, উপ-কমিশনার (উত্তর) হাবিবুর রহমান উপ-কমিশনার (উত্তর) হাবিবুর রহমান খান, উপ-কমিশনার (ডিবি) মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর