১৯ জুলাই, ২০১৮ ২১:২৭
রাসিক নির্বাচন

লিটনের প্রতিশ্রুতি কর্মসংস্থান, বিএনপির দাবি সেনা মোতায়েন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

লিটনের প্রতিশ্রুতি কর্মসংস্থান, বিএনপির দাবি সেনা মোতায়েন

রাজশাহীতে আলাদা প্রচারণায় অংশ নিয়ে আবারও নিজ নিজ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়রপ্রার্থী। গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নতুন কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেন। আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনা মোতায়েনের দাবি জানান বিএনপি প্রার্থী।
সকালে নগরীর দাসপুকুর এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মিলনায়তনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ রাজশাহী শাখার আয়োজনে চিকিৎসক, নার্সেস, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে ‘আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। এসময় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘গত পাঁচ বছর রাজশাহীবাসীর জীবন থেকে নষ্ট হয়ে গেল। কোনো উন্নয়ন হয়নি, কর্মসংস্থান হয়নি। যে মেয়র ঈদের আগে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারেন না, বেতন দেওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়, সে ১০ লাখ মানুষের কল্যাণ করবে কীভাবে? বিএনপির বুলবুলকে দিয়ে কোনো উন্নয়ন হয়নি, আগামীতেও হবে না।’
তিনি আরও বলেন, কর্মসংস্থান ছাড়া রাজশাহীর মানুষকে উন্নয়ন দেওয়া সম্ভব না। তাই শিল্পায়নের মাধ্যমে এক লাখ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দিতে চাই, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এছাড়া নগরীর যত উন্নয়ন দরকার,সব করবো। এজন্য সবার সহযোগিতা ও ভোট প্রয়োজন। আমাকে ভোট প্রদান করে কাজ করার সুযোগ দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, কাজ করলে মানুষ পুরস্কৃত হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে আমরা পরাজিত হয়েছিলাম। এর কারণে দেশ এগিয়ে গেলেও রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটির কোনো উন্নয়ন হয়নি। কারণ বিএনপির মেয়রদের অযোগ্যতার কারণে তারা প্রকল্প এনে উন্নয়ন করতে পারেননি।
মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক আরও বলেন, গত ৫ বছরে রাজশাহীর মানুষদের উপলব্ধি হয়েছে, তারা বুঝে গেছে, কাকে দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব। বিগত সময়ে আমরা একসাথে উন্নয়ন কাজ করেছি। তারপরও ২০১৩ সালে একসাথে হেরেছি। তবে এবার খুলনা থেকে উন্নয়নের ভোট শুরু হয়েছে। আগামীতে একসাথে কাজ করার সুযোগ এসেছে। লিটন সাহেবকে যদি রাজশাহীবাসী নির্বাচিত করতে পারেন, তবে তিনি যে উন্নয়ন করবেন। অন্য কাউকে দিয়ে সেই উন্নয়ন সম্ভব না। রাজশাহীর উন্নয়নের জন্য খায়রুজ্জামান লিটনের বিকল্প নেই।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ রাজশাহী জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. চিন্ময় কান্তি দাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সনাল ও পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ।
এদিকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোটাররা উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারেন সেই নিশ্চয়তার জন্য ভোটের দিনের সাতদিন পূর্বে সেনা মোতায়েন করার দাবি জানান ২০ দলীয় জোট প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড় থেকে গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এই দাবি জানান। বুলবুল বলেন, সাধারণ ভোটাদের আওয়ামী লীগের লোকজন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। মাইকিং করতে বাধা প্রদান করছে। নির্বাচনী প্রচারণায় কর্মীদের বাধা এবং গালিগালাজ করছে। এই অবস্থায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
গণসংযোগে অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সরকারকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। বাংলাদেশে নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই। সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সরকারে এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে কোন নির্বাচন ষুষ্ঠু ও অবাধ হবে না। তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান। সেইসাথে তিন সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের সদস্যদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহবান জানান তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, নাদিম মোস্তফা।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর