১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ১১:৪৬

ঢাকায় ‘বৃন্দাবনের প্রেম মন্দির’

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকায় ‘বৃন্দাবনের প্রেম মন্দির’

প্রকৃতি এখন শরতময়। সুনীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে ছেড়া মেঘের পাল। নদীর তীরজুড়ে বাতাসে লুটোপুটি খাচ্ছে কাশফুল। এমনই অপরূপ প্রকৃতিতে বাজছে পূজার ঘণ্টা। মহা ধুমধামে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপনে প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে সাজ সাজ রব চারদিকে। শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত পূজারিরা। সাজসজ্জার কাজে এদিক থেকে ওদিক ছুটছে মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকরা।

রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন (কেআইবি) প্রাঙ্গণের পাশেই বিশাল আকারে তৈরি করা হয়েছে পূজামণ্ডপ। মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, উৎসব ঘিরে বিরাজ করছে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের আবহ। এখানে বর্ণিল পূজামণ্ডপটি তৈরি করেছে সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘ। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে এটি ২৭তম আয়োজন। এবার মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে বৃন্দাবনের বিখ্যাত প্রেম মন্দিরের আদলে।

এ প্রসঙ্গে সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, প্রেমেই ভক্তি, প্রেমেই ঈশ্বর। আমরা বিশ্বাস করি জীবে প্রেম করে যেজন, সেজন সেবিছে ঈশ্বর। এ ধারণাটা রেখেই আমরা এবার বৃন্দাবনের বিখ্যাত প্রেম মন্দিরের আদলে শারদীয় দুর্গা উৎসবের পূজা মণ্ডপ সাজিয়েছি।

১০০ জন শ্রমিক গত এক মাস ধরে তৈরি করছেন দুর্গা উৎসবের মণ্ডপ। মণ্ডপে এখন চলছে শেষ পর্যায়ের সাজসজ্জার কাজ। খামারবাড়ি মোড়ে এবং মণ্ডপের সামনে তৈরি করা হয়েছে বড় আকারের  গেট এবং খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত পুরো রাস্তা সেজেছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়।

এবার সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের শারদীয় দুর্গা উৎসবের স্লোগান হচ্ছে, সনাতনের দুর্গাপূজায় করব আমরা সকল তীর্থ।

এই স্লোগানের অর্থ ব্যাখ্যা করে সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, বাংলাদেশে বহু সনাতন ধর্মালম্বী আছে যারা বয়সজনিত কারণে কিংবা অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে ভারতবর্ষের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারেন না। তাই আমাদের এ পূজা মণ্ডপের আয়োজনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান যেমন কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর মন্দির, মায়াপুর মন্দির, গয়া, কাশি, মথুরা, বৃন্দাবনসহ সকল তীর্থ স্থানের মন্দির এখানে  থাকবে। যাতে যারা বয়সজনিত কারণে বা অর্থনৈতিক কারণে তীর্থে যেতে পারেন না, তারা এসে এ মন্দিরগুলো পরিদর্শন করার মধ্য দিয়ে তাদের মনের তীর্থ করার সুপ্ত বাসনা পূর্ণ করতে পারেন।

দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় গত ৮ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে। আজ সোমবার ষষ্ঠীপূজা আরম্ভ। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে মর্তে আগমন ঘটবে দেবী দুর্গার।  ১৬ অক্টোবর মহাসপ্তমীপূজা এবং ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে মহাষ্টমী ও সন্ধিপূজা। ১৮ অক্টোবর মহানবমী পূজায় থাকবে আরতি প্রতিযোগিতার আয়োজন। ১৯ অক্টোবর বিজয়াদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী বছর দেবী দুর্গার আগমনের অপেক্ষায় শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসব।

আজ ষষ্ঠী পূজার দিন থেকে দশমীর দিন পর্যন্ত সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের আয়োজনে রয়েছে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আজ উপস্থিত থাকবেন ঢাকা ১২ আসনের সংসদ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ১৬ অক্টোবর মহাসপ্তমী পূজায় থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য , কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি, ১৭ অক্টোবর মহাষ্টমী পূজায় উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এছাড়া পূজার ৫ দিনই সরকারি দলের আরও বেশ কয়েকজন নেতা ও মন্ত্রী পূজা মণ্ডপে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া পূজা চলাকালীন প্রায় ১০ হাজার ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণেরও পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, প্রতি বছরই সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের পক্ষ থেকে দুর্গা উৎসবের আয়োজন করা হয়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষ পূজা প্রাঙ্গণ সকল শ্রেণীর মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর