১৯ অক্টোবর, ২০১৮ ২০:০৯

সব হারা সেই মানুষগুলো ফের শুরু করলো নুতন সংসার

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

সব হারা সেই মানুষগুলো ফের শুরু করলো নুতন সংসার

জমি আছে ঘর নেই। এবার তাদের ঘর করে দিল সরকার। সরকারের টাকায় নির্মাণ করা ঘরে সব হারা মানুষগুলো আবার নুতন করে সংসার শুরু করেছে। সেই সংসারে লেগেছে নতুন টিনের ঘর, হয়েছে বারান্দা, পেয়েছে উঠান আর স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন। 

বগুড়ার সোনাতলায় একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে জমি আছে যার এমন ৩২২ টি পরিবারকে পূর্ণবাসন করার জন্য সরকার ৩২২ টি ঘর নির্মাণ করার জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। যাদের নামে ঘরগুলো বরাদ্দ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই তারা ঘরগুলো বুঝে নিয়ে বসবাস শুরু করে দিয়েছে। ঘর পেয়ে দরিদ্র মানুষগুলো আনন্দে সংসার শুরু করেছে। 

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬২টি ঘর এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে ৩২২টি পরিবার যাদের ২ শতক থেকে ৫ শতক বাড়ির জায়গা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ঘরগুলি। 

ইতিমধ্যেই ঘর নির্মাণের কাজ শেষ করে বরাদ্দকৃত ঘরগুলো তালিকাভুক্তদের বুঝে দেওয়া হয়েছে। ঘরগুলো বুঝে পাওয়ার সাথে সাথে দরিদ্র মানুষগুলো বসবাস শুরু করে দিয়েছে। ঘর পেয়ে তারা খুশি। উপজেলার ৩২২ পরিবারের প্রায় ১ হাজার নারী পুরুষ। কাঠ ও টিন দিয়ে তৈরী ঘরগুলোতে মোট ৫৪ পিচ টিন রয়েছে। ৬ ফুট ও ৮ ফুট বিশিষ্ট টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে ২০টি পরিবার সেই প্রকল্পের আওতায় এসেছে। এতে করে দুইটি অর্থ বছরে মোট ৩২২টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণে সরকারের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। একটি করে ঘর, বারান্দা ও ল্যাট্রিন রয়েছে প্রতিটি প্যাকেজে। 

বগুড়ার সোনাতলা পৌর এলাকার গোপাই শাহবাজপুর এলাকার বাবু মিয়া (৪০), হাসু মিয়া (৩৫), জহুরুল ইসলাম (৪৫), আগুনিয়াতাইড় এলাকার নান্নু মিয়া (৪০), শ্যামপুর এলাকার জহুরা বেগম (৪৫), পোড়াপাইকর এলাকার জরিনা বেওয়া (৫৫) জানান, সারাদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ও ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা দু‘মুঠো অন্ন তুলে দিতে পারলেও স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বৃষ্টির দিনে আশ্রয় নিতে হতো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিংবা অন্যের বারান্দায়। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়ায় মাথাগোঁজার ঠাঁই হয়েছে।

বগুড়ার সোনাতলা পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান শান্ত জানান, ইতিমধ্যেই যাদের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে তারা বসবাস শুরু করে দিয়েছে। সরকারিভাবে তালিকা ও যাচাই করে এই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকার একেবারে অভাবি কিন্তু জমি রয়েছে তাদের জন্য ঘর করে দিয়েছে সরকার। 

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিকুর আলম জানান, এটি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের একটি প্রকল্প। সরকারের এই ধরণের উদ্যোগে দরিদ্র মানুষগুলো খুঁজে পেয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই।
 
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, উপজেলায় যে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ঘর মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা সেখানে নতুন করে সংসার শুরু করেছে। 


বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর