২১ অক্টোবর, ২০১৮ ২২:০১

নারায়ণগঞ্জে নিহতদের মধ্যে ৩ জনের মাথায় গুলি, চালকের লাশ শনাক্ত স্ত্রীর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জে নিহতদের মধ্যে ৩ জনের মাথায় গুলি, চালকের লাশ শনাক্ত স্ত্রীর

সরকারি সেবা সার্ভিস ৯৯৯ এ থেকে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে ৪ জনের ক্ষতবিক্ষত চার যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাঁচরুখী ঘিদিরপাড়া নামক স্থান থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো নারায়ণগঞ্জ শহরের ভিক্টোরিয়ার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। ছবিতে কালো টি শার্ট নীল জিন্স পরোহিত লাশটি রামপুরা থানা লুৎফর মোল্লার (৩৫) বলে দাবি করেছে রেশমী বেগম নামে এক নারী। ওই নারী নিহতের স্ত্রী বলে দাবি করেন।  এব্ং বলেন, সে নোয়া গাড়িটির চালক। তবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারো পরিচয় পায়নি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এদিকে ময়না তদন্তের প্রাথমিক তদন্তে জানানো হয়েছে, ৪ জনের মধ্যে ৩ জনকে মাথায় শর্ট গানের গুলি ছুড়ে হত্যা করা হয়েছে। 

অপরদিকে, উদ্ধার হওয়া প্রত্যকের মুখমন্ডলে মারাত্মক আঘাতের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও সবার মাথার এক পাশে ভারী কোন বস্তু দিয়ে থেঁতলে দেওয়া রয়েছে। নিহত ব্যাক্তিদের তিনজনের পরণে জিন্সের প্যান্ট এবং গায়ে ছিল টি-শার্ট ও একজনের পরনে ছিল লুঙ্গি। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে দুইটি পিস্তল, ১ রাউন্ড তাজা গুলি ও একটি সাদা রঙয়ের নোয়া গাড়ী (ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-০৫০১) উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতদের সকলের বয়স ৩০ থেকে ৪৫ এর মধ্যে। 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার আানিসুর রহমান জানান, রবিবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে সরকারি সেবা সার্ভিস ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে রাস্তার দুই পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় চার ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুইটি পিস্তল, এক রাউন্ড তাজা গুলি ও একটি নোয়া ব্যান্ডের সাদা মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থল থেকে যেহেতু পিস্তল গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ডাকাত দলের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া এরা কোনো দুর্বৃত্ত হবে বলে ধারণা করছি।  
ঘটনা তদন্তের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মাইক্রোবাসটি চেসিস নং দিয়ে বিআরটিতে আবেদন করা হচ্ছে, যাতে এর প্রকৃত মালিক পাওয়া যায়। লাশগুলো যেহতু অজ্ঞাত সেহেতু পুরো বিষয়টি এখন তদন্তাধীন। তবে কোন লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে বিকাল ৫টায় তিনি নিশ্চিত করেন। 

এদিকে দুপুরের পর থেকে চারটি লাশের ময়নাতদন্ত চলাকালীন রেশমী বেগম নামে এক নারী স্বজনদের নিয়ে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে এসে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, কালো টি শার্ট পরোহিত যুবকটি তার স্বামী। তার নাম লুৎফর মোল্লা। সে রেইন্ট এ কারে উদ্ধার হওয়া নোয়া মাইক্রোটি চালান। ওই মাইক্রোর মালিক রফিক বলে জানান ওই নারী। 

তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাতে লুৎফর মোল্লা ঢাকায় একটি ভালো ট্রিপ পেয়েছেন বলে মাইক্রোটি নিয়ে বের হন। শুক্রবার রাত পার হয়ে শনিবার পর্যন্ত তার মোবাইলে ফোনে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই রামপুরা থানায় রেমশী বেগম বাদী হয়ে লুৎফর মোল্লা নিখোঁজের জিডি করেন। রবিবার রেশমী বেগম টিভিতে চারজনের লাশের সংবাদ দেখতে পেয়ে তার স্বামী লুৎফর মোল্লার লাশ ও তার চালিত মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করেন। তবে ওই দিন রাতে লৎফুর কাদের ট্রিপ নিয়েছিলেন সে সম্পর্কে কোন তথ্য জানাতে পারেনি রেশমী। 

এদিকে, চারটি লাশের ময়না তদন্তকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসাদুজ্জামান জানান, ৪টি লাশের মধ্যে তিনজনকে মাথায় শর্ট গানের গুলি করা হত্যা করা হয়েছে। অপর ১ জনকে আঘাতে হত্যা করা হয়েছে। 

এদিকে, এ বিষয়ে আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাহমুদ বলেন, স্থানীয়রা জানালে আমিও ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশগুলো পরে থাকতে দেখি। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না। তবে রাতে কেউ কোন গুলির শব্দও পায়নি। আর লাশগুলো স্থানীয়রা কেউ চিনতে পারেনি।

বিডি-প্রতিদিন/২১ অক্টোবর, ২০১৮/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর