শেরপুর পৌরসভার ১৫০ বছর পূর্তিতে কয়েক দিন ধরেই শহরের সর্বত্র সাজ সাজ রবরব শুরু হয়েছে। আলোকসজ্জা, তোরণ নির্মাণ, রাস্তার দুই ধারে নানা রঙের পতাকা ও ফেস্টুন-ব্যানারে শোভাবর্ধনে সাজানো হয়েছে শহরব্যাপী। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর রাতের শহর এখন আলোর ঝলকানিতে যেন তিলত্তমা এক নগরী। সব মিলিয়ে এ যেন অন্য অচেনা এক নগরী।
শেরপুর পৌরসভার ইতিহাস ঐতিহ্যের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৬ মাস ব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্কে অনুষ্ঠানের যাত্রার শুভ সূচনা হয়। বিশিষ্ট অতিথিদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ৬ মাস ব্যাপী অনুষ্ঠানকে সফল করতে ২/৩ মাস ধরেই পৌর পরিষদ ও কর্মচারীদের যেন একদণ্ড ফুসরত নেই।
পৌরসভার সচিব আবু লায়েস মো. বজলুল করিম জানান, ১৮৬৮ সালের ১লা এপ্রিল বৃটিশরা জমিদার অধ্যুষিত প্রাচীণ কামরুপ রাজ্যের অর্ন্তগত হিন্দু শাসক দলিপ সামন্তের শেরপুরকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১৯ সালের ১লা এপ্রিল এই পৌরসভার দেড়শ বছর পূর্ণ হবে। এই দেড়শ বছরকে ঘিরেই ৬ মাস অর্থাৎ আগামি পহেলা এপ্রিলে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
পৌর পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর পৌরসভার সার্ধশত বার্ষিকী বা ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৬ মাস ব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-নান্দনিক স্থাপনা পৌরসভার ঐতিহ্যের অহংকার পুরাতন ভবনটিকে সংস্কার করে সেটিকে পৌর যাদুঘর করা হবে। পৌরপার্ক মাঠের পাশে নির্মাণ করা হবে ৫ তলার একটি আধুনিক সিটি সেন্টার ভবন। দেড়শ’ বছর পূর্তি উৎসবের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে রাতের বেলা শহরের বর্জ-ময়লা অপসারণ কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় শহরের ইজিবাইক ও যানজট নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা আনয়ন এবং শহরের ভেতরে গরুর অবাধ বিচরণ বন্ধ করা হয়েছে। একটি ‘ ক্লিন এবং গ্রীন’ (পরিচ্ছন্ন ও সবুজ) শহর হিসেবে শেরপুরকে গড়ে তোলার কাজ চলছে।
প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারি মো. আবুল আলাম আজাদ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. দিলদার আহাম্মেদ, অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নিযন) মো. মাহবুবহোসেনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিগণ।
সূচনা বক্তব্যে মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া শেরপুর পৌরসভার নানা ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে এই শহরকে আধুনিক নাগরিক ও পরিবেশ বান্ধব করে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন