শিরোনাম
১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ২১:৪৬

'বিজয় সমাবেশে' যুবলীগের চোখ ধাঁধানো আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

'বিজয় সমাবেশে' যুবলীগের চোখ ধাঁধানো আয়োজন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় ‘বিজয় সমাবেশ’ করেছে আওয়ামী লীগ। সংসদ নির্বাচনের জয়ের পর প্রথম সমাবেশ ছিল স্মরণকালের সেরা আয়োজন। 

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই নয়, যেন শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট ও মৎসবভবন এলাকায় ছিল জনসমুদ্র। বিশাল জনসমুদ্রে চোখ ধাঁধানো আয়োজন করে যুবলীগ। 

সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের নিদের্শনায় ঢাকা 
মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ‘কমান্ডিং নিদের্শনা’য় লাল-সবুজের সমারেহ ভিন্ন মাত্রা আনে জনসমুদ্রে। 

শনিবারের বিজয় সমাবেশে প্রায় দুই লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সমাবেশের একটি বড় অংশ ড়েই ছিল যুবলীগের নেতাকর্মী। তাদের গায়ে ছিল সবুজ গেঞ্জি, মাথায় ছিল সবুজ ক্যাপ, হাতে ছিল লাল-সবুজের জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং লাল ফিতা। 

দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট জনসমাবেশের মাঝামাঝিতে একটি উঁচু টেবিলে দাঁড়িয়ে যখন যে নিদের্শনা দেন লক্ষাধিক নেতাকর্মী সেই নিদের্শনা মোতাবেক প্রদর্শনীর মাধ্যমে ভিন্নমাত্রা এনে দেয়। কখনো লাল-সবুজের পতাকা নেড়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিভাদন জানানো, লাল ফিতা উড়িয়ে এবং হাতের কসরত (কদমফুল) প্রদর্শনী নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে ভিন্নমাত্রায়।  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরেও ছিল লোকারণ্য।  

বেলা আড়াইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে জনসভা শুরু হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে কানায় কানায় ভরে যায় উদ্যান। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানা-পাড়া-মহল্লা ছাড়াও ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠন এবং দলীয় এমপিরা মিছিল নিয়ে যোগ দেন সমাবেশ স্থলে। 

উৎসবমুখর পরিবেশকে আরও সাজিয়ে তোলে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ সুরের ব্যান্ড বাদ্য। ঢাকঢোল বাদ্যের সুরের তালে নেতা-কর্মীদের নৃত্য ছিল চোখে পড়ার মতো। আর ব্যানার, ফেস্টুনের সঙ্গে কয়েক হাজার লাল-সবুজের টি-শার্ট ও মাথায় সবুজ ক্যাপ, হাতের নৌকা ছিল চোখে পড়ার মতো। 

এদিকে, যুবলীগের নিজস্ব গবেষণা ও প্রকাশনা সেল ‘যুব জাগরণ’ দুটি স্টল করে জনসভাস্থলের পাশে। এ দুটি স্টলে প্রায় ৪ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। জনসভার মূল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল নৌকার আদলে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। 

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের এই বিজয় সমাবেশ বেলা আড়াইটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন থেকে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বাদ্যযন্ত্রের বাজনাসহ দৃষ্টিনন্দন মিছিল নিয়ে প্রবেশ করতে থাকেন। বেলা ১টার আগেই সমাবেশের সিংহভাগ দখলে নিয়ে নেয় যুবলীগের লক্ষাধিক নেতাকর্মীরা। সমাবেশে যোগ দিতে আসা অনেকেই বললেন, অতীতে কখনোই দেখা যায়নি।  

গাজীপুর থেকে জনসভায় যোগদান করতে আসা প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা প্রণব কান্তি বলেন, আমার দেখা স্মরণকালের সেরা শোডাউন আজকে। দেশের মানুষ যেভাবে ৩০ ডিসেম্বর নৌকায় ভোট দিয়েছে। বিজয় সমাবেশেও স্বতঃস্ফূর্ত গ্রহণও চোখে পড়ার মতো। সত্যিই এমন দৃষ্টিনন্দন সমাবেশ অনেকদিন পরই দেখলাম। বিশেষ করে যুবলীগের লাল-সবুজের বিভিন্ন প্রদর্শনী ছিল চোখে পড়ার মতো। 

যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যুবলীগ একটি শক্তিশালী ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। আমরা এর প্রমাণ বার বার দিয়ে আসছি। গতকালের বিশাল সমাবেশকে ভিন্নমাত্রা দিতে যুবলীগ চোখ ধাঁধানোর আয়োজন করে। লাল-সবুজের সমারেহ, হাতের কসরত, জাতীয় ও দলীয় পতাকা নেড়ে সভাকে ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে। 

তিনি বলেন, যুবলীগের শ্রেষ্ঠ শাখা হচ্ছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। আজকের সমাবেশেও তার স্বাক্ষর রেখেছে। ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো ছিল। 

যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট বলেন, যুবলীগ জাতির জনকের হাতে গড়া সংগঠন। তার কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। বিশাল বিজয়ে আজকের বিজয় সমাবেশকে দৃষ্টিনন্দন করতে সু-শৃঙ্খলভাবে উপস্থিত থেকে জনসমাবেশকে সফল করেছি। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে যুবলীগ মাঠে ছিল। আগামীতেও রাজপথে থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়নে এগিয়ে নিতে জনমত সৃষ্টি করবে। 

তিনি বলেন, যুবলীগ চেয়ারম্যানের নিদের্শেই আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করে সমাবেশকে জনসমুদ্রে রূপ দিতে চেষ্টা করেছি। 

৪ লাখ টাকার বই বিক্রি 

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয় সমাবেশ উপলক্ষে দুটি বুক স্টল স্থাপন করেছিল যুবলীগ। সংগঠনের গবেষণা সেল ‘যুব জাগরণ’ এর নিজস্ব প্রকাশনার বইয়ের পসরা সাজানো হয় বাংলা একাডেমি ও টিএসসি এলাকায়। 

স্টলে কয়েক হাজার বই বিক্রি করা হয়। যার মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, ‘দ্য কোয়েস্ট ফর ভিশন-২০২১-শেখ হাসিনা’, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিশ্ব শান্তির দর্শন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম, ‘পিপল এমপাওয়ারমেন্ট: এ পিস মডেল বাই শেখ হাসিনা’, ‘গ্লেবাল পিস: রোল অব শেখ হাসিনা’, ‘বায়োগ্রাফি অব শেখ হাসিনা: চ্যালেঞ্জেস অব পিস’ সহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বিভিন্ন প্রকাশনা স্থান পায় এই স্টলে। এছাড়া যুবলীগের বিভিন্ন পুস্তিকা, প্রচারপত্র, বুকলেট, ছবির অ্যালবাম, বিভিন্ন লেখকের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বই স্টলে বিক্রি করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রচলিত ধারার রাজনীতির বিপরীতে যুব সমাজের মধ্যে মেধা, মনন এবং সংস্কৃতির আলো ছড়িয়ে দিতে বিজয় মেলায় আমরা বুক স্টল চালু করেছি। আলোকিত সমাজ আর আলোকিত যুব সমাজ গড়তে যুবলীগ এ ধরনের কর্মকাণ্ড সব সময় অব্যাহত রাখবে।   

বিডি প্রতিদিন/১৯ জানুয়ারি ২০১৯/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর