২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০৮:৩৬

হামলার জন্য ৩৯ লাখ টাকা ও অস্ত্র জোগাড় করে জঙ্গি রিপন

নিজস্ব প্রতিবেদক

হামলার জন্য ৩৯ লাখ টাকা ও অস্ত্র জোগাড় করে জঙ্গি রিপন

ত্রিশালের মতো আরও একটি জঙ্গি ছিনতাইয়ের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা আঁটছিল মামুনুর রশীদ রিপন। শুধু তাই নয়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতেও হামলার ছক এঁকেছিল সে। কিন্তু র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় তার সেসব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরুর পরই রিপন এই পরিকল্পনা নেয়। 

র‌্যাবের জেরার মুখে রিপন জানিয়েছে, হলি আর্টিজান হামলার জন্য সে ৩৯ লাখ টাকা ও অস্ত্র সংগ্রহ করে। আর এসব সংগ্রহ করা হয় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে। সেই হামলার পরপরই সে সীমান্ত গলে ভারতে পালিয়ে যায়। গতকাল রবিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এসব তথ্য দিয়ে বলেন, রিপনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে গাজীপুরের বোর্ডবাজারে একটি বাস থেকে রিপনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থেকে ঢাকার দিকে আসার সময় রাত ১টার দিকে যাত্রীবাহী বাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে রেজাউল করিম ওরফে রেজা নব্য জেএমবির একজন প্রথম সারির নেতা। সে গুলশানে হলি আর্টিজান হামলা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ঘটনার পর থেকে রিপন পলাতক ছিল।

র‌্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘আমরা রিপনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে জানিয়েছে, ত্রিশালের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটিয়ে জঙ্গিদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিল তারা। জেএমবির আমির আবদুর রহমানের জামাতা আওয়ালের ভাগ্নে হওয়ায় রিপনের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সংগঠনে।’ 

তিনি বলেন, জেএমবিতে রিপনের দায়িত্ব ছিল অর্থ সংগ্রহ, সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও অস্ত্র সরবরাহ করা। জঙ্গিদের সঙ্গে তার ভালো যোগাযোগ ছিল। উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ হামলা রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে হয়েছে। হামলা চালানোর আগে তারা মহড়া দিত। ২০১৬ সালের এপ্রিলে এমন একটি মহড়ায় র‌্যাবের অভিযানে জেএমবির শূরা সদস্য ফারদিন ও তারিকুল ইসলাম জুয়েল নিহত হয়। তবে ওই মহড়ায় ছিল না রিপন। হলি আর্টিজান হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের জন্য রিপন ভারতে আত্মগোপনে চলে যায়। সে জেএমবিকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করে। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে ফের বাংলাদেশে আসে রিপন। সম্প্রতি তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা নিয়েছিল।

র‌্যাব জানিয়েছে, ২০১৬ সালের এপ্রিলে রিপনের নেতৃত্বে একটি জঙ্গি দল ভারত যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার। হলি আর্টিজান হামলার আগে আনুমানিক ৩৯ লাখ টাকা সারোয়ার জাহানকে পাঠায় রিপন। সে হলি আর্টিজান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহের সঙ্গেও জড়িত ছিল। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল রিপন।

রিপনের বরাত দিয়ে মুফতি মাহমুদ বলেন, পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গি নেতা তামিম চৌধুরীর সঙ্গে সারোয়ার জাহানের একটি বৈঠকের সমঝোতা স্মারক প্রস্তুত করা হয় ২০১৫ সালে। ওই সমঝোতার ভিত্তিতে সারোয়ার জাহানকে আমির নির্বাচিত করা হয়। তার সাংগঠনিক নাম দেওয়া হয় শায়খ আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। ওই বৈঠকে জেএমবি সদস্য সাদ্দাম ওরফে কামাল, শরিফুল ওরফে রাহাত ও রিপনসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে মামুনুর রশিদ রিপন শূরা সদস্য নির্বাচিত হয়।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর